নুসরাত হত্যায় অর্থ লেনদেনের খোঁজ পেয়েছে সিআইডি

এইমাত্র জাতীয়

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির ঘটনা এবং তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তের অংশ হিসেবে সোনাগাজীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহে এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেনীর সোনাগাজী যাচ্ছে সিআইডির তদন্ত দল। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘নুসরাতের সঙ্গে এই ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুসন্ধান করা হবে। তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমসহ সবার ব্যাংক হিসাব দেখবে সিআইডি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই অর্থ লেনদেনের সংস্পর্শে এসেছে তাদের আমরা আইনের আওতায় আনবো। আমাদের অনুসন্ধানে লন্ডারিংয়ের তথ্য পাওয়ার পর আমরা সোনাগাজী থানায় মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করবো।’ মোল্লা নজরুল আরও বলেন, ‘অবৈধ অর্থ, সেটা কেরোসিন কেনার জন্য হোক, কাউকে প্রভাবিত করার জন্য টাকা ইনভেস্ট করা হোক অথবা কেউ যদি টাকা দিয়ে থাকে এই মৃত্যু অথবা শ্লীলতাহানির ক্ষেত্রে। এ হত্যাকাণ্ড প্রভাবিত করার জন্য, সাপ্রেস করার জন্য, অথবা খুন করার জন্য যদি টাকা ইনভেস্ট করে থাকে, সেটাও মানিলন্ডারিং।’


বিজ্ঞাপন

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় মুখোশ পরা চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লাহর বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। প্রায় ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় নুসরাতের পরিবারের করা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪ জন দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার এজাহারে থাকা ৮ আসামির সবাই গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় গ্রেফতার মোট ১৮ জনের মধ্যে ১৩ জনকে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গ্রেফতার ১৮ জন হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজদৌল্লা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আব্দুল কাদির।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *