নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ একবছর পর নিজেদের কার্যালয় বুঝে নিলো বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির সদস্যরা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পূর্ত ভবনের এই কার্যালয়টিতে গত বছরের ১২ মে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর সরকার।
রোববার বিকেলে শত শত সদস্য একজোট হয়ে ‘জয়বাংলা শ্লোগানে’ দিয়ে রুদ্ধ কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। গণমাধ্যম কর্মীদের সামনেই কার্যালয়ের দরজা খোলার পর পুরনো কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট পাননি তারা। সমিতির হিসেব নিকাশের ফাইলপত্রসহ সব ধরনের ডকুমেন্ট উধাও হয়ে গেছে এখান থেকে। সদস্যদের কাজের জন্য থাকা সারি সারি কম্পিউটারের গায়েব। সব টেবিল ফাঁকা পড়ে আছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রায় দেড় হাজার ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর প্রাণের এই সংগঠনটির এরূপ দেখে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সদস্যরা। নিজেদের পরিশ্রম আর অর্থ ব্যয়ে গড়া সমিতির এই বেহাল দশা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না তারা।
সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করে তারা বলেন, সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর সরকার সদস্যদের নিকট থেকে নানা বাহানায় লাখ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। সদস্যদের পদোন্নতি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো কাজই না করে সব টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সদস্যরা সমিতির হিসাব বুঝিয়ে দিতে বলেন এবং পদোন্নতির জন্য দেয়া টাকা ফেরত চান। সদস্যরা এসব বিষয়ে আলী আকবর সরকারকে সমিতির কার্যালয়ে লাঞ্চিতও করেন।
এরপর কাউকে কিছু না বলে সমিতির আলমিরাতে থাকা সব ফাইলপত্র এবং কম্পিউটারে থাকা ডকুমেন্ট গায়েব করতে সব কম্পিটার এখান থেকে সরিয়ে কার্যালয়ে তালা দিয়ে নিজে গা ঢাকা দেন। এরপর দীর্ঘ একবছর কেটে গেলেও বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়ায় সদস্যরা নিজেরাই বন্ধ সমিতি অফিস খুলে এর দখল নেন।
এবিষয়ে সমিতির সিনিয়র সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, ইউনুস আলী, মামুনসহ একাধিক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আলী আকবর সরকারের মতো লুটেরা সাধারণ সম্পাদক এরআগে কোনোকালে কেউ দেখেনি। সদস্যদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকায় নিজের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া ডিপার্টমেন্টাল মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যয় করছেন। সমিতির হিসাব নিকাশ যাতে দেয়া না লাগে সেজন্য সব ফাইলপত্র চুরি করে নিয়ে গেছেন। আমরা গণপূর্ত অধদিপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীসহ উর্দ্ধতনদের বিষয়টি অবগত করবো।
সমিতির সিনিয়র সদস্য বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সমিতির সাধারণ সম্পাদক মির্জা এটিএম মোস্তফা বলেন, সদস্যরা পূর্তভবনে এসে বসার জায়গাটাও পান না। সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় এক গ্লাস পানি খাওয়ার জন্যও অন্যদের রুমে যেতে হয়। যে কারণে তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস বুঝে নিয়েছেন। তবে অফিসে কিছুই নেই। সবকিছু গায়েব করে দিয়েছেন আলী আকবর সরকার। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।