খাদ্যে ভেজালকারীরা সমাজের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী

এইমাত্র জাতীয় রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৪ দলের সমন্বয়ক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেছেন, খাদ্যে ভেজালকারীরা সমাজের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী। এরা খাদ্যে ভেজাল দেয়ার মাধ্যমে অগণিত মানুষকে হত্যা করছে। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত। সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এই জন্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনবিরোধী অগণতান্ত্রিক আন্দোলন না করে, খাদ্যে ভেজাল ও মাদক নির্মূলে আন্দোলন করুন। আমরা আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাবো। তিনি আরো বলেন, সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। ভেজাল ও মাদক বিরোধী আন্দোলন এর উদ্যোগে সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত ‘নিরাপদ খাদ্য ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সাবেক শিল্পমন্ত্রী কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐষধ প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, কৃষিবিজ্ঞানী ড. মো. আলী আফজাল, সোয়াব এর চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুজ্জামান প্রমুখ। মূল প্রবন্ধে লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল বলেন, নিরাপদ খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, দেশের প্রায় সকল খাদ্যেই ভেজাল রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আজ আমাদের নাগালের বাইরে। দেশের সকল মানুষ আজ খাদ্যে ভেজালের আতঙ্কে। খাদ্যে ভেজালের দৌরাত্মে জনজীবন আজ হুমকীর সম্মুখীন। মহাখালী পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের খাদ্য পরীক্ষাগারের তথ্যানুযায়ী, দেশের ৫৪ ভাগ খাদ্যপণ্য ভেজাল ও দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত হয়। সারা দেশ থেকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের পাঠানো খাদ্যদ্রব্যাদি পরীক্ষাকালে এ তথ্য বেরিয়ে আসে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এক গবেষণায় বলছে, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ, কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এই পরিসংখ্যানটি আমাদের ভাবিয়ে না তুলে পারে না। নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তায় ২০১৩ সালে আইন হয়েছে। ২০১৫ সালে গঠন করা হয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। ভেজালবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তারা কাজ করছে নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেজালবিরোধী অভিযান তো আছেই। তার পরও কমছে না ভেজালের ব্যাপকতা। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে খাদ্যে ভেজাল দেয়া এবং ভেজাল খাদ্য বিক্রির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আমরা আশা করব, ভেজালবিরোধী অভিযান কঠোর হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে। ভেজাল পণ্য ও অসাধু ব্যবসায়ীদের ঠেকাতে অভিযান নিয়মিত থাকলে ভেজালকারীদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা করা যায়। তবে ভেজাল ঠেকাতে সচেতনতার বিকল্প নেই। শুধু আইন দিয়ে ভেজাল ঠেকানো সম্ভব নয়। এ জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *