বিশেষ প্রতিবেদক : ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে বাড়ে দুর্ঘটনা। দীর্ঘ হয় মৃত্যুর মিছিল। ফলে ঈদের আনন্দযাত্রা রূপ নেয় বিষাদে। পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায়, লক্কর-ঝক্কর গাড়িতে উঠতে বাধ্য হন যাত্রীরা।
পুলিশ বলছে, টাকা বাঁচাতে এসব বাসে চড়তে গিয়ে, দরিদ্র মানুষ দুর্ঘটনার বেশি শিকার হন। আর পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, যাত্রীদের সচেতনতার পাশাপাশি কঠোর হতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
চকচক করলেই সোনা হয় না। তবু পুরনো গাড়িতে বাহারি রং লাগিয়ে চেষ্টা চলছে, নতুন করার। নতুন রংয়ে গাড়ির বয়স লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা হচ্ছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, ভাঙাচোরা গাড়ি মেরামতের সময়, আকার বাড়ানো হচ্ছে। এতে গাড়ির আনুপাতিক হারে গড়বড় হয়ে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
‘এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনিস্টিটিউটর পরিসংখ্যান মতে, ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১,৩৩০টি। এর মধ্যে কেবল ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ঘটেছে ৯৭টি দুর্ঘটনা, যাতে প্রাণ গেছে ২৬২ জনের। পরের বছর দুর্ঘটনা ঘটে ২,৯১৭টি। ঈদে ঘটা ২৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৮৯ জনের। আর ২০১৮ সালে দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৫টি, যার মধ্যে ঈদে ১৭৮টি। এতে প্রাণ গেছে ২২২ জনের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আইনের দুর্বলতার সুযোগে পরিবহন মালিকরা একই অপরাধ বারবার করছেন।
ফিটনেটহীন গাড়ি চলাচলে প্রচলিত আইনে শাস্তি সামান্য। আছে আইনের ফাঁক-ফোকরও, যা গলে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা।
এ বিষয়ে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঈদ যাত্রায় লাখো মানুষ নাড়ীর টানে বাড়ি যায়। যখন কেউ যাত্রীদের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের দায়িত্ব নেন তখন যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা তার মাথায় রাখা উচিৎ। অবশ্যই অভিজ্ঞ ড্রাইভারের হাতে যানটি দিতে হবে। গাড়ীর লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং যাত্রী ও গাড়ীর ইন্স্যুরেন্স থাকতে হবে। এর কোনটিই যদি না থাকে তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আশা করছি এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখবে।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, সড়ককে নিরাপদ করে প্রাণহানি কমাতে হলে, কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি আইন সংস্কার জরুরি।