খালেদার আদালত স্থানান্তরের বৈধতা নিয়ে শুনানি হয়নি

আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের আদালত পুরান ঢাকা থেকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনের শুনানি হয়নি সোমবার। আবেদনের সঙ্গে সম্পূরক নথি হলফনামা আকারে দাখিলের জন্য আসামি পক্ষ চাইলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার দিন রাখেন। এসময় আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও মওদুদ আহমদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক। গত ২৮ মে শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারনের আইনজীবীদের কাছে আদালত কিছু বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছিল। সেসব প্রশ্নের আইনি জবাব দিতে সময় চাওয়ায় আদালত গতকাল সোমবার শুনানির জন্য রাখে। কিন্তু এদিন খালেদার আইনজীবী কিছু সম্পূরক নথি হলফনামা আকারে দাখিল করার জন্য শুনানি ‘নট টুডে’ রাখার মৌখিক আবেদন করেন। তিনি এ জে মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, নাইকো এবং আরও অন্যান্য মামলার বিশেষ আদালতকে স্থানান্তর করা হয়েছে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে। যেটা আইনসিদ্ধ হয় নাই। এটা বেআইনি এবং সংবিধান পরিপন্থি। তিনি বলেন, আগেও সে রিটের শুনানি হয়েছে, আজও শুনানির জন্য ছিল। এর মধ্যে কিছু কাগজপত্র দাখিল করতে চেয়েছিলাম। সে কাগজপত্রগুলো দাখিল করতে হলে আগে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। আদালত সে অনুমতি দিয়েছেন। এখন সেগুলো অ্যাফিডেভিট করে দাখিল করতে হবে। যেহেতু অ্যাফিডেভিট করতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাবে, সেহেতু আমরা বলেছি শুনানিটা আজ (গতকাল সোমবার) না করে আগামীকাল (মঙ্গলবার) করলে ভাল হয়। আদালতও সম্মত হয়েছেন। ফলে আগামীকাল (মঙ্গলবার) শুনানি হচ্ছে। নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য বিশেষ আদালত পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগার থেকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। আদালত স্থানান্তরে জারি করা সরকারের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা গত ২৬ মে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন। পরে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল বলেছিলেন, ‘সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদবহির্ভূত পদক্ষেপ হওয়ায় এবং প্রচলিত ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৯ এর (১) ও (২) উপধারাবিরোধী হওয়ায় নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ জজ আদালত-৯ কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের দুই নং ভবনে স্থানান্তরে গত ১২ মে জারি করা গেজেটকে কেন অবৈধ এবং বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। এছাড়া রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই গেজেটের কার্যকারিতাও স্থগিত চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদি করা হয়েছে। আদালত স্থানান্তরে ১২ মে জারি করা গেজেট বাতিল বা প্রত্যাহার করতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে আইন সচিবকে গত ২১ মে আইনি নোটিস দেওয়া হয়। নোটিসে বলা হয়েছিল, এর মধ্যে গেজেটটি প্রত্যাহার বা বাতিল না করলে করলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইন সচিবের কাছ থেকে আইনি নোটিসের জবাব না পেয়ে পরে রিট আবেদনটি করা হয়। বর্তমানে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন সুস্থ হলে তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার সিদ্ধান্তও ইতোমধ্যে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। দুর্নীতির মামলায় এক বছর আগে দ-ের পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পরিত্যক্ত কারাগারে খালেদাকে রেখে তার বিরুদ্ধে অন্য কয়েকটি মামলার বিচারও সেখানেই চলছিল।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *