বিশেষ প্রতিবেদক : দেশব্যাপী ঈদযাত্রায় ১২ দিনে ৯৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় দেড় শতাধিক নিহত এবং সাড়ে তিন’শ জনেরও বেশী আহত হয়েছেন। ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের দেয়া তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি এ তথ্য জানায়।
সংস্থাটি জানায়, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সংবাদ সংস্থা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
সংস্থাটি দাবি করেছে সড়ক দুর্ঘটনার এসব তথ্যে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, দেশে বাস ভ্রমণ অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে ঈদের সময় সড়ক ও নৌপথে পরিবহন ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক ভালো ছিল। প্রায় সব মহাসড়ক বড় ধরনের যানজটমুক্ত ছিল। ঘরমুখী মানুষজনকে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঢাকায় পর্যাপ্ত লঞ্চ ছিল।
তবে, ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যয়ের কারণে যাত্রীরা এ খাত থেকে প্রত্যাশিত সেবা পাননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস ও লঞ্চের মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে পারেনি বলে জানায় নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
তারা জানায়, ৩০ মে সাতটি দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত ও আটজন আহত এবং ৩১ মে ছয়টি দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও সাতজন আহত হন।
১ জুন ১০ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হন মোট ১১টি দুর্ঘটনায়। ১৫টি দুর্ঘটনায় ২ জুন ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন। ৩ জুন সাতটি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হন।
ঈদের আগের দিন ৪ জুন ছয়টি দুর্ঘটনায় ১৬ ও ৬২ জন যথাক্রমে নিহত ও আহত হন। ঈদের দিন ৫ জুন ২৬ জন নিহত ও ৭৮ জন আহত হন ১৬টি দুর্ঘটনায়। ঈদের পর দিন ৬ জুন আটটি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ১১ ও ৩৩ জন।
৭ জুন ১১ জন নিহত এবং ১৮ জন আহত হন ছয়টি দুর্ঘটনায়। সাতটি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত ও ১১ জন আহত হন ৮ জুন। আর ৯ জুন ছয়টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হন যথাক্রমে পাঁচ ও ২৪ জন।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনার জন্য তারা ছয়টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন।
কারণগুলো হলো- বিভিন্ন ফেরিঘাট ও টোল স্টেশনে ব্যয় হওয়া সময় পুষিয়ে নিতে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক পুলিশের উদাসীনতা, নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের তাগিদের কারণে চালকের অন্যমনস্কতা, অতিরিক্ত ট্রিপ দেয়ার কারণে চালকদের শারীরিক ও মানসিক অবসন্নতা, ওভারটেকিংয়ের সময় ট্রাফিক আইন অনুসরণ না করা এবং আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিনচাকার যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল।