বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী ৭০টি উপাদান

অপরাধ অর্থনীতি আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় সাত হাজারের বেশি ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়া নারী, শিশুসহ অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ধোঁয়া তিলে তিলে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (যুগ্ম-সচিব) মো. খায়রুল আলম সেখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বাবুল কুমার সাহা ও মো. সাইদুর রহমান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর তামাকের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন দু’টোই ভয়াবহও প্রাণঘাতী নেশা। পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ক্রনিক লাং ডিজিজসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। প্রাণঘাতী এসব রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি। তামাকের কারণে পৃথিবীতে প্রতিবছর ৭০ লাখ মানুষ অকালে মারা যায়। এর মধ্যে, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়ে বছরে নয় লাখ মানুষ মারা যায়। ডাব্লিউএইচও-এর ২০০৪ সালের গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে ১২ লাখ মানুষ আটটি প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ অকাল পঙ্গুত্বের শিকার হয়। টোব্যাকো এটলাস শিরোনামের আন্তর্জাতিক এক প্রকাশনায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাক জনিত রোগে মারা যায়। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সরকার তামাক খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তার চাইতে অনেক বেশি অর্থ তামাক জনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় করতে হয়। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী বলেন, ধূমপান মাদক সেবনের প্রবেশ পথ। তামাক সেবনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মাদকের দিকে ধাবিত হয়ে পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যমসহ সব শ্রেণীপেশার মানুষকে তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনে শামিল হতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, তামাক ব্যবহার রোধে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রণীত হতে যাচ্ছে। আইন ও বিধি বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি ও তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে প্রচলিত তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বড় করার পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে ২০৪০ সালের মধ্যে অবশ্যই তামাকমুক্ত করা সম্ভব হবে। প্রতিবছর ৩১ মে দিবসটি উদযাপিত হলেও এ বছর ২০ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিন র‌্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হতে যাচ্ছে। ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ফুসফুস ক্যান্সার এবং ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ যেমন- অ্যাজমা/হাঁপানি ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়তে এ বছর দিবসটির স্লোগান- ‘তামাকে হয় ফুসফুস ক্ষয়: সুস্বাস্থ্য কাম্য, তামাক নয়’।


বিজ্ঞাপন
👁️ 10 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *