ডেস্ক রিপোর্ট : গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও মেহেরপুরে কথিত বন্দুকযুদ্ধ ও দু’পক্ষের গোলাগুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে গাজীপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন, মেহেরপুরে দু’দল মাদক কারবারীর মধ্যে গোলাগুলিতে একজন এবং চট্টগ্রামে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এসব ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
গাজীপুর: শ্রীপুরে র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই ডজন মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের দুম্বারিচালা এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে র্যাব-১-এর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামানের ভাষ্য। নিহত মো. বাবুল মিয়া (৩৫) ওই এলাকার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মো. আফছার উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদক চোরাকারবারের ২৪টি মামলা রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে র্যাব। কামরুজ্জামান বলেন, দুম্বারিচালা এলাকায় মাদক চোরাকারবারিদের আবস্থানের খবর পেয়ে রাতে সেখানে অভিযানে যায় র্যাবের একটি দল। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। এ সময় র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে বাবুল গুলিবিদ্ধ হলে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ বাবুলকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, অভিযানের সময় পড়ে গিয়ে র্যাবের কনস্টেবল মো. জিকরুল ও মো. কামরুল আহত হন। তাদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল এবং চার হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তথ্য দিয়েছে র্যাব।
মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাজীপুর থেকে ছয় মামলার এক আসামির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের খবর জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘দুই দল মাদক চোরা কারবারির গোলাগুলিতে’ তিনি নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে কাজীপুর মুন্সিপাড়া এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে গাংনী থানার ওসি ওবাইদুল ইসলামের ভাষ্য। নিহত এনামুল ইসলাম (৪২) গাংনী কাজীপুর বর্ডারপাড়া এলাকার দাউদ হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের একটি, চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি এবং মাদক আইনের চারটি মামলা রয়েছে গাংনী থানায়। ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, রাতে মুন্সিপাড়া এলাকায় মাদক চোরাকারবারিদের দুটি দলের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গোলাগুলি থামিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখানে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ এবং একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও এক কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। ওসি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়রা তাকে এনামুল হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য এনামুলের লাশ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম: বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বাঁশখালীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর মেম্বার (৪৮) ও তার ভাই খলিল আহমদ (৪৫) নিহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে আটটি অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। নিহতরা সরল এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৭ এর মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পু্লশি সুপার মো. মাশকুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঁশখালীর সরল এলাকায় জাফর মেম্বারকে গ্রেফতারে অভিযান চালালে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে জাফর মেম্বার ও তার ভাই খলিলের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে আটটি অস্ত্র, বিপুল গুলি ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র মজুদ, খুন ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে জাফরের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা এবং তার ভাই খলিলের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে বলেও তথ্য দেন মো. মাশকুর রহমান। জাফর মেম্বার ও তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর এলাকাবাসী মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে জানান ঘটনাস্থলে থাকা র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ।