নকশা জটিলতা নিরসনে শিগগিরই চালু হচ্ছে ডিজিটাল ডাটাবেজ

অন্যান্য অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় ঢাকা বানিজ্য রাজধানী

রাজউক

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর ভবনগুলোর সঠিক নকশা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই ডাটাবেজের তথ্য ফায়ার সার্ভিসও দেখতে পারবে। এরই মধ্যে এর ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মাসের শেষ নাগাদ এটির কার্যক্রম চালুর কথাও রয়েছে।
এ বিষয়ে রাজউকের মেম্বার উন্নয়ন শাখার (ইঞ্জিনিয়ার) মেজর (অব.) শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩ জুলাই উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের সি-শেল চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে অগ্নিকা-ে পাশের দুটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ভবনে থাকা একটি আবাসিক হোটেলে দুজন দগ্ধ হয়ে মারাও যান। ওই ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ও উদ্ধার কাজ চালাতে খুব বেগ পেতে হয়েছিল দমকল কর্মীদের। তিনটি ভবনের কোনোটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবনগুলো নির্মাণ করা ছিল না। এরপরই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর রাজধানীর ভবনগুলোর নকশা ডিজিটাল ডাটাবেজের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে। ওই বছরই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্টের (টিএ) একটি চুক্তি হয়। পরবর্তী সময়ে এই ডাটাবেজ তৈরির সম্পূর্ণ কাজটি রাজউক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া কয়েক মাস আগে বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের ঘটনার পর নগরীর ভবনগুলোর নকশা জটিলতার বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে। রাজউকের কাছে থাকা নকশা এবং ভবন মালিকের কাছে থাকা নকশার মধ্যে অনেক অমিল দেখা যায়। এই জটিলতা নিরসন করতেই রাজধানীর ছোট-বড় সব ভবনের নকশাগুলো ডিজিটাল ডাটাবেজের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে রাজউক।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কল্যাণ ট্রাস্ট) আতাউল হক বলেন, রাজধানীর ভবনগুলোর নকশা ডিজিটাল ডাটাবেজের আওতায় আনতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেটি তৈরি করতে হলে রাজউকের কাছ থেকে ভবনগুলোর নকশা আনতে হতো। সেটি কিছুটা জটিল ছিল। তাই ডাটাবেজটি তৈরির দায়িত্ব রাজউককে দেয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।
তিনি বলেন, এই ডাটাবেজের সঙ্গে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের শেয়ারিং থাকবে। এতে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে যে কোনো দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে পারবে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, যখন কোনো ভবন বা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগে তাৎক্ষণিক সংবাদের ভিত্তিতে তারা সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে ছুটে যান। সেই সময় তাদের কাছে ওই ভবনের নকশা থাকে না। তাই অনেকটা অন্ধের মতোই ভবনের ভেতরে ও উপরে উঠতে হয়। যদি ভবনগুলোর নকশার একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ থাকে, তবে দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা ওই ভবনের কোথায় কী আছে, সে বিষয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত নিতে পারবেন। এজন্য ডাটাবেজটি রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ভবনগুলোর নকশা ডিজিটাল ডাটাবেজে থাকলে তা সংরক্ষণের পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী খুঁজে যাওয়া যাবে। কোনো ভবনে দুর্ঘটনা ঘটলে সেখানে কার্যকর অপারেশন পরিচালনা করতে ডিজিটাল ডাটাবেজ অনেক কাজে আসবে। এছাড়া কোনো ভবন মালিক রাজউকের নকশার বাইরে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। এতে যেমন নকশা জটিলতার অবসান ঘটবে, তেমনি স্বচ্ছতাও থাকবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *