নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার উত্তরায় উবার চালক আরমানকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান জানান, গত শনিবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার তিনজন হলেন- সিজান, শরীফ ও সজীব। গত ১৩ জুন রাত দেড়টার দিকে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কে ৫২ নম্বর বাসার সামনে প্রাইভেট কারের ভেতরে ৪০ বছর বয়সী আরমানের লাশ পাওয়া যায়। উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই ফারুক হোসেন সেদিন বলেছিলেন, আরমানের মৃতদেহ ছিল গাড়ির চালকের আসনে। ঘাড়ে ছিল ধারলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল কেউ। তাতে ব্যর্থ হয়ে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে। আরমানের গ্রামের বাড়ি পাবনার ইশ্বরদীতে, ঢাকায় তিনি থাকতেন পল্লবীতে। আরমান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজনের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ জানিয়েছে, আরমানকে হত্যার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল তার টয়োটা এলিয়ন ব্র্যান্ডের গাড়িটি ছিনতাই করা। গতকাল রোববার সকালে মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, সিজান পেশাদার ছিনতাইকারী। গাড়িটি ছিনতাই করার জন্য এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। গ্রেফতারদের কাছ থেকে তথ্যের বরাতে তিনি বলেন, এক ব্যক্তিকে আট লাখ টাকায় একটি এলিয়ন গাড়ি ব্যবস্থা করে দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল সিজানের। এজন্য গাড়ি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা সফল করতে সে শরিফ ও সজীবকে সহযোগী করে। এজন্য গাড়ি বিক্রির টাকা থেকে তাদেরকে এক লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সে। আব্দুল বাতেন বলেন, ওই রাতে তারা নিউ মার্কেট থেকে দুটি ছুরি কেনে। এরপর সিজান উবারের গাড়ির জন্য রিকোয়েস্ট পাঠানো শুরু করে। এভাবে পাঁচটি রিকোয়েস্ট পাঠালেও একটিও টয়োটা এলিয়ন গাড়ি না হওয়ায় সবগুলো বাতিল করে। এরপর ষষ্ঠ গাড়ি এলিয়ন হওয়ায় সেটি কনফার্ম করে। ওই গাড়িটিই আরমান চালাচ্ছিলেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, গাড়িটি নিয়ে তারা তিনজন উত্তরার দিকে চলে যায় এবং নির্জন স্থানে গিয়ে আরমানের গলায় ছুরি মেরে হত্যা করে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তারা গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যায়। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, উবার অ্যাপে কবির নামের যে রেজিস্ট্রেশন থেকে সিজান গাড়ি ডেকেছিল সেটিও ভুয়া ছিল। এলিয়ন গাড়ির জন্য যে ব্যক্তির সঙ্গে সিজানের চুক্তি হয়েছে তার ব্যাপারে তথ্য নিতে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।