বন্ডদেরকে আড়াল করতে সিসিটিভি গায়েব!

অপরাধ আইন ও আদালত সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক : বরগুনায় রিফাত হত্যাকান্ড প্রকাশ্যে আসে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর জন্য। কিন্তু সেটা ছিল ঘটনার শেষ দৃশ্য। ঘটনার শুরু হয় আরো আগে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে তারা ছাড়াও বন্ড বাহিনীর সদস্যরা এ ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল। সরকারি কলেজের ভেতরে নোটিশ বোর্ডের সামনে রিফাতকে প্রথম পেটানোর সময় সিসি ক্যামেরায় ছবিগুলো থাকার কথা। কলেজের অধ্যক্ষের দাবি ঘটনার দুদিন আগে বজ্রপাতে সিসি ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়ে যায়।
অভিযোগ উঠেছে, অধ্যক্ষ দিনের পর দিন কলেজ ক্যাম্পাসে বন্ড বাহিনীর অপরাধ আড়াল করে রাখার চেষ্টা করেছেন। অবশ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বলেন, কলেজ মাদক মুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, বহিরাগত মুক্ত। কলেজের বাইরে কোথায় কি ঘটে এইটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে না।
বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কলেজের পরিবেশকে খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করলেও শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের বক্তব্য কলেজের পরিবেশ ছিল রীতিমত ভীতিকর। সবার সাথে কথা বলতে গেলে এখনও উঠে আসে কলেজ ক্যাম্পাসে বন্ড বাহিনীর নানা নির্যাতনের চিত্র। আর কলেজের অধ্যক্ষের প্রশ্রয়েই বহিরাগতরা এক প্রকার অফিস খুলে প্রভাব বিস্তার করতো বলে দাবি তাদের।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, লেখাপড়া হতো না এখানে, বহিরাগত. কলেজের ভেতর রাজনীতি, এগুলো বন্ধ না হলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরবে না। রিফাত ফরাজি ছাত্র হোস্টেলে গিয়ে ছেলেদের হুমকি দিতো ও মাদকের টাকা চাইতো বলেও অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।
একইভাবে কলেজের পাশে বসবাসকারীরাও মাদকসেবী ও বহিরাগতদের তা-বের কথা জানান। এলাকাবাসীও অভিযোগ করেন, কলেজের সামনে মেয়েদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হতো।
ধামা চাপা দেয়া হয়েছে রিফাতকে কোপানোর ঠিক আগ মুহূর্তের ঘটনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যারা রিফাতকে কুপিয়েছে তাদের বাইরেও বন্ড বাহিনীর একটি দল কাজ করেছে কলেজের ভেতরে। ওইদিন নোটিশ বোর্ডের সামনে থেকে তারা রিফাত শরীফকে মারতে মারতে কলেজ গেটের বাইরে নিয়ে যায়। আর সেখানেই পরবর্তীতে নয়ন, রিফাত ফরাজি ও রিশান ফরাজিসহ সন্ত্রাসীরা রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে।
নোটিশ বোর্ডের সামনে রিফাতকে প্রথম যেখানে পেটানো হয়েছে, সেখানে লাগানো আছে দুটি সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরা দুটিতে অবশ্যই ধরা পড়ার কথা কলেজ ক্যাম্পাসে মারধরের ঘটনা। তবে অধ্যক্ষ জানান, ঘটনার দুদিন আগে বজ্রপাতে কলেজের সব ক্যামেরা বিকল হয়ে যায়।
অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বলেন, ক্যামেরাগুলো সব ভালোই ছিল। ২৪ তারিখে বজ্রপাতের কারণে মনিটরটা নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে কলেজ হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা বলছে, বজ্রপাতের কোন ঘটনাই ঘটেনি সে সময়। শিক্ষার্থীরা বলেন, এক মাস কেন, কলেজে আরও আগেও যদি কোনো বজ্রপাত হতো, তাহলে তা আমরা শুনতাম। কিন্তু এখানে কোনো বজ্রপাত হয়নি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *