নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান শিক্ষক, গবেষক ও অর্থনীতিবিদদের প্রতি আরও গবেষণার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে দেশ, জাতি ও সমাজের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা সম্ভব। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘টেকসই উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে ঢাবির অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো এবং অর্থনীতি বিভাগ। এর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বৈষম্য দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করে পরিকল্পনামন্ত্রী গবেষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাজে যে বৈষম্য বিরাজ করছে সেগুলো তুলে ধরুন। যারা সম্পদ ও ভূমিহীন, তাদের কিভাবে মূলধারায় ফিরিয়ে এনে মূল কাজে সম্পৃক্ত করা যায়, যাতে তারাও তাদের সম্পদ অর্জন করতে পারে, সে লক্ষে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের যত গ্রামীণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ আছে, তার ওপরে দরিদ্র মানুষের হাত মোটেও নেই। তারা সাহস করে সামান্য যেটুকু পা বাড়ায়, সে সময় আমরাই তাদের পেছনে ঠেলে নিয়ে আসি। আমরা তাদের বাড়ির পাশের জলাশয়ে মাছ ধরতে দেই না, বনের কাঠ কাটতে দেইনা। সমাজে ভয়ঙ্কর রকমের অসাম্য বিরাজ করছে। আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত অসাম্য। অন্যায়গুলো দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন। এখান থেকে বেরিয়ে আসার পথটুকু তৈরিতে আপনারাও সহায়তা করুন। ঢাবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আমরা এটাই আশা করি। এ সময় মন্ত্রী যারা জিরো লেভেল বাস করে, তাদের লেভেল ওয়ানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এম এ মান্নান বলেন, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সবারই লাভ হবে। কার্যক্ষেত্রে সরকার যেহেতু উন্নয়নের কাজ করছে, এতে সরকারও লাভবান হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব। কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না। এই বিশ্বাসে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করছি। আমরা একটা ভ্রাতৃত্ব চাই। যার ফলে কাজটি সহজ হবে। অর্থনৈতিক, আইনি ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য কমানোই সরকারের মূল লক্ষ। অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকসই উন্নয়নে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা তাদের গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে দেশ এবং জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন- এমন প্রত্যাশাই তিনি ব্যক্ত করেন। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক-উজ-জামান, অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএম আকাশ ও ব্যুরোর পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমা বেগম প্রমুখ। দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা ৩০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।