বিশেষ প্রতিবেদক : গত ১০ বছরে বাংলাদেশ রেলওয়ে উন্নয়নের জন্য খরচ করেছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। অথচ গত অর্থ বছরেরই সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের লোকসানের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে পৌঁছেছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকায়।
বিপুল পরিমাণ অর্থ উন্নয়নে খরচ করেও লোকসানের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজন বিবেচনা না করে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থ খরচের অযোগ্যতা সর্বোপরি দক্ষ জনশক্তির অভাবে মিলছে না সুফল।
দীর্ঘদিন বিনিয়োগ বঞ্চিত ধ্বংসপ্রায় রেলকে উজ্জীবিত করতে গত দশ বছরে খরচ করা হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। যা ছাড়িয়েছে অতীতের সব বরাদ্দ রেকর্ড। অথচ একটুও পরিবর্তন হয়নি যাত্রীদের পুরনো সব অভিযোগ।
বিনিয়োগের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের লোকসানের পরিমাণও। বিনিয়োগ যেমন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে, তেমনি লোকসানেও রেকর্ড করেছে রেল। পাঁচ বছরে লোকসানের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা।
পাহাড়সম বিনিয়োগ তবুও লোকসান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় প্রকল্প বগি, ইঞ্জিন, লাইনসহ যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা না করে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকেই ঝোঁক বেশি রেলের।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রয়োজনীয় খাতগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভের কথা চিন্তা করা হয়নি এ খাতে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সক্ষমতা, অর্থখরচের অযোগ্যতা সর্বোপরি দক্ষ জনশক্তির অভাবে কাজে আসছে না বিনিয়োগ, এমন মন্তব্য করে যাত্রীসেবা ও পণ্যপরিবহন সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক ও রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক তাফাজ্জল হোসেনের।
রেলওয়ে বলছে, গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে এ অবস্থা। তবে এর সুবিধা পেতে সময় লাগবে আরও।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন বলেন, যে প্রকল্পগুলো রেকমেন্ডেড আছে সেগুলো বাস্তবায়িত হলেই রেলওয়ের নেটওয়ার্ক সারা দেশে পৌঁছাবে।
এই মুহূর্তে চলমান রয়েছে ৪৮ টি উন্নয়ন প্রকল্প, যার সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।
এবার বাজেটে ১৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েকে। শুধু অর্থখরচের জন্য প্রকল্প নয়, বরং লোকসানের কারণ অনুসন্ধান করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।