বিনোদন প্রতিবেদক : ১৯৯৭ সালে ক্যাপ্টেন এহতেশামের পরিচালনায় ‘মৌমাছি’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। তখন সবে এসএসসি পাস করেছেন মুনমুন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ক্যামেরার সামনে আসেন তিনি। ‘মৌমাছি’ মুনমুন অভিনীত প্রথম ছবি হলেও বড়পর্দায় তার জীবন রহমান পরিচালিত ‘আজকের সন্ত্রাসী’ ছবিটি প্রথম মুক্তি পায়। এ ছবির পর ‘দুই নাগিন’, ‘বিষে ভরা নাগিন’, ‘টারজান কন্যা’, ‘রানী কেনো ডাকাত’, ‘লেডি রংবাজ’, ‘বিষাক্ত নাগিন’, ‘রাজা রানী’, ‘রাজা’, ‘মৃত্যুর মুখে’, ‘জানের জান’সহ ৮০টি ছবি মুক্তি পায়। মারপিটে পারদর্শী মুনমুনকে নিয়ে নির্মাতারা নির্মাণ করেন অ্যাকশন ধাঁচের সিনেমা। খুব তাড়াতাড়ি সাফল্য ধরা দেয় এ অভিনেত্রীর হাতে।
উপহার দেন একের পর এক সফল সিনেমা। তবে চলচ্চিত্রের দুঃসময়ের সূচনালগ্নে তাল মেলাতে না পেরে তিনি শিকার হন ফিল্ম পলিটিক্সের। তার বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ ওঠায় চলচ্চিত্র জগৎ ছেড়ে দেন তিনি। মুনমুন বলেন, আমার নামে অশ্লীলতার বদনাম আনা হয়েছিল! আমার চেয়ে
অনেক বেশি অশ্লীলতায় ভরা ছবিতে অভিনয় করেছেন অনেকে। কিন্তু বিভিন্নভাবে নাম হয়েছে আমার। অথচ যখন অশ্লীলতার সময় তখন আমি ফিল্ম ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমি তো চাইলে তখন টাকা কামানোর জন্য একের পর এক ছবি করতে পারতাম। তা করিনি। বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কারভাবে জানতে চাইলে এই নায়িকা বলেন, এনায়েত করিমসহ সে সময় বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র পরিচালক অশ্লীল ছবি নির্মাণ করেছেন। সবশেষ স্বপন চৌধুরী পরিচালিত ‘মহিলা হোস্টেল’ ছবিতে নায়িকা চরিত্রে কাজ করেছিলাম। এ ছবির সেটে গিয়ে পরিচালকের সঙ্গে ঝগড়া করেছিলাম আমি। কারণ অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয়ে আপত্তি ছিল আমার। এমন পর্যায়ে যখন দেখলাম চারদিকে একই অবস্থা তখন অশ্লীলতা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ফিল্মি ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালাম। সে সময় সংক্ষিপ্ত পোশাকে অভিনয় বা গান কে করে নাই? অনেকেই এমন পোশাকে ক্যামেরার সামনে এসেছেন। তবে আমি ফিল্ম পলিটিক্সের শিকার হয়েছি। এখনো সেই সময়ের কথা মনে পড়ে। ২০০৩ মাসের জুন মাসে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়েছিলাম আমি। দীর্ঘদিন পর কয়েকটি ছবিতে আবার কাজ করলাম। এখন সময়টা ভালো। তাই আবার অভিনয়শিল্পী হিসেবে কয়েকটি কাজ শুরু করেছি। এসব ছবি প্রসঙ্গে মুনমুন বলেন, আমি নাচ, ফাইট না শিখে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলাম। আমার নিজের নামে ছবি চলেছে। অ্যাকশন লেডি চরিত্রে অভিনয় করে নাম পেয়েছিলাম। অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে। দর্শকের গ্রহণযোগ্যতাতেই টিকে ছিলাম। তখন টিকে থাকা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর এই সময়ে নায়িকা চরিত্রে না, লেডি খলনায়িকার ভূমিকায় ‘রাগী’ ও ‘তোলপাড়’ নামে দুটি ছবিতে কাজ করেছি। যারা আমাকে কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর অনুদানের ‘কাসার থালায় রুপালী চাঁদ’ ও হারুন-উজ-জামানের ‘পদ্মার প্রেম’ ছবিগুলিতে আমাকে বিশেষ চরিত্রে দর্শকরা দেখতে পাবেন। আমি শিল্পী। অবশ্যই কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে যাবো। যতদিন সম্ভব অভিনয়টা করে যেতে চাই। তবে আমার অভিনীত এ ছবিগুলো চললে আমি সিনেমাতে নিয়মিত কাজ করবো, আর না চললে অভিনয় জগৎ থেকে বিদায় নেব। এটাই আমার সিদ্ধান্ত। বর্তমানে আমি স্বামী, দুই ছেলে যশ ও শিবুকে নিয়ে ভালো আছি। যশের বয়স ১৩ এবং শিবুর বয়স ৬ বছর পার হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে বেশ সুখেই আছি আমি।