হত্যার নেপথ্যে অন্য কেউ

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জীবন-যাপন সারাদেশ

মাদকের বলী রিফাত, ঘটনাচক্রে মিন্নি!

বিশেষ প্রতিবেদক : বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যাকা- নিয়ে একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। শুরুতে নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নি এই হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থাকলেও পরবর্তীতে তিনিই হয়ে যান আসামি। পরকীয়াই এই হত্যাকা-ের মূল কারণ বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তবে এবার বেরিয়ে এসেছে আরেক তথ্য।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র বলছে, রিফাত হত্যার নেপথ্যে থাকতে পারেন বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকি। তিনি রিফাত হত্যার অন্যতম দুই আসামি রিফাত ফরাজি ও রিশান ফরাজির খালা।
বরগুনায় রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার নেপথ্যে মাদকের বিষয়টিই আলোচনা হচ্ছে। কেননা রিফাত হত্যার সাথে জড়িতরা সবাই মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। তারা সবাই ০০৭ বন্ড বাহিনীর সদস্য।
রিফাত শরীফ হত্যার পরে অংক মেলানো যাচ্ছিলো না। আয়শা সিদ্দিকী মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কারণেই জন্য যদি হত্যাকা-টি হয়ে থাকে, তবে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী কেন রিফাত শরীফকে কোঁপাবে? রিফাত ফরাজী কেন আগে দৌড়ে রামদা নিয়ে আসলো?
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির গ্রেপ্তারের আগেই বলেছিল, তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে। তার পরিবারের সদস্যরাও দাবী করেছেন, রিফাত শরীফ হত্যার সঙ্গে একাধিক ঘটনা জড়িত। তার মধ্যে রিফাত হত্যার দুদিন আগের একটি ঘটনা ও দেড় মাস আগের আরেকটি ঘটনা প্রাধান্য পাচ্ছে।
রিফাত শরীফ, রিফাত ফরাজী, নয়ন বন্ডসহ ০০৭ বাহিনীর সদস্যরা একত্রেই মাদক সেবন ও ব্যবসা করতো। এক সময় তারা একত্রেই চলাফেরা করতো। এমনটি একটি মাদকের মামলায় রিফাত শরীফ ও রিফাত ফরাজী একত্রে আসামি ছিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ মে রাত পৌনে ২টার দিকে রিফাত শরীফ ১০০ পিস ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল। বরগুনা থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক সোহেল খান তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় রিফাত শরীফকে আটকের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা। তারা ওইদিনই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। ওই মামলায় আটকের পরে রিফাত শরীফ ১৯ দিন কারাগারে ছিল।
কারাগার থেকে বের হয়ে রিফাত শরীফ তার প্রতিপক্ষ রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের কাছে জানতে চায়, কেন তারা ইয়াবা দিয়ে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে। কেন তারা তাকে আটকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েছে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে রিফাত ফরাজীকে হাতুড়ি পেটা করে রিফাত শরীফের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা। রিফাত শরীফকে হত্যার পেছনে এটিও একটি কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিন্নির চাচা আবু সালেহ জানিয়েছেন, রিফাত শরীফকে হত্যার দুদিন আগে ঘটেছে আরেকটি ঘটনা। রিফাত শরীফের কাছ থেকে ইয়াবা কিনেছিল হেলাল নামে এক যুবক। ইয়াবার টাকা না দেয়ায় গত ২৪ জুন হেলালের মোবাইল ফোনসেট কেড়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলালের সঙ্গে রিফাত শরীফের আগে বন্ধুত্ব থাকলেও পরবর্তীতে নয়ন বন্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। যে কারণে রিফাত শরীফের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসেটটি উদ্ধার করার জন্য আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে ফোন করেছিল নয়ন বন্ড। মিন্নি নয়নের কথায় ২৪ জুন রাতেই রিফাত শরীফের কাছ থেকে হেলালের মোবাইল ফোন সেটটি উদ্ধার করে। সেদিন মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে স্বামীর মারধরের শিকার হয়েছে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। রিফাত শরীফ হত্যার আগের দিন ওই মোবাইল সেট নিয়েই নয়নের বাসায় গিয়েছিল মিন্নি। তখন মিন্নি বলেছিল, মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে তাকে স্বামীর মার খেতে হয়েছে। নয়ন তখন তাকে বলেছিল, তোমার স্বামীকেও পাল্টা মারা হবে। যাতে রিফাত শরীফ তার স্ত্রীর গায়ে হাত না দেয়, সে শিক্ষা দেয়া হবে। রিফাত শরীফকে শিক্ষা দেয়া নিয়ে ২৫ জুন রাতেও নয়ন বন্ডের সঙ্গে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির মোবাইলে কথা হয়েছে। তার পরের দিন সকালে রিফাত শরীফকে কোপানো হয়েছে। বরিশালে নেয়ার পথে বিকেল ৪টার দিকে রিফাত মারা যায়।
এর আগের ঘটনাটি ঘটেছিল, চলতি বছরের ৫ মে সন্ধ্যায়। মাটিয়াল ক্যাফের পরিচালক মুশফিক আরিফ জানিয়েছেন, ওইদিন সন্ধ্যায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে সঙ্গে নিয়ে তার স্বামী রিফাত শরীফ মাটিয়াল ক্যাফে এসেছিল।
গত ২৬ জুন সকালে বরগুনার কলেজ রোডে প্রকাশ্যে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে যারা কুপিয়ে হত্যা করেন তাদের অগ্রভাগে ছিলেন রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। ওইদিনের ঘটনার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট ভাই রিশান পেছন দিক থেকে রিফাত শরীফকে জাপটে ধরে ছিলেন। আর বড় ভাই রিফাত ফরাজি দা দিয়ে কোপাচ্ছিলেন। বড় ভাইয়ের সেই দায়ের আঘাতে রিশানের হাতও অনেকটা কেটে গিয়েছিল। রিফাত হত্যার প্রধান আসামি ছিলেন নয়ন। নয়ন-রিফাত দ্বন্দ্বের কারণ হিসেবে রিফাতের স্ত্রী মিন্নির সঙ্গে নয়নের পরকীয়াকে দায়ী করা হচ্ছিলো।
ভাবা হচ্ছিলো, মিন্নির কারণেই রিফাতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন নয়ন। কিন্তু রিফাতকে কোপানোর সময় ফরাজি ভাইরাই কেন সবচেয়ে বেশি নৃশংস হয়ে উঠেছিলেন সেই প্রশ্ন উঠছেই। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ঘটনার পেছনে জড়িয়ে আছে আরেক কাহিনী।
রিফাত ফরাজি ও রিশান ফরাজির বাসা শহরের ধানসিড়ি রোডে হলেও তারা থাকতেন শেখ রাসেল স্কয়ার লাগোয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসায়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শামসুন্নাহার খুকী তাদের খালা হন। খুকীর একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে কয়েক বছর আগে পানিতে ডুবে মারা যায়। তখন থেকেই দুই ভাই রিফাত ও রিশান তাদের খালা চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে মা বলে ডেকে আসছিলেন। তারা দুই ভাই ওই বাসায়ই থাকতেন। এমনকি চেয়ারম্যানের স্ত্রী তার ভাগ্নেদের সব অপকর্মেই প্রশ্রয় দিতেন বলেও জানা যায়।
রিফাতের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তারও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই তার খালা চেয়ারম্যানের স্ত্রী খুকি প্রভাব খাটিয়ে তাকে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন।
মুশফিক আরিফ জানিয়েছেন, সেদিন শামসুন্নাহার খুকি দুদিনের মধ্যে তাকে ঘর ছেড়ে দিতে বলেছেন। তিনি সময় নিয়ে গত ৩০ জুন ঘর ছেড়ে আরেকটি ঘরে মাটিয়াল ক্যাফের ব্যবসা চালাচ্ছেন। এ ঘটনার ৫ দিন পরেই রিফাত শরীফ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। অনেকেই ধারণা করছেন, ওই ঘটনার কারণেই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী ০০৭ বন্ডের সদস্যদের নিয়ে রিফাত শরীফকে হামলা করেছিলেন।
বরগুনার সাধারণ মানুষ মনে করে মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়েই এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে। বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, রিফাত শরীফ হত্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে, মাদক ও ০০৭ কিশোর গ্যাং বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৬০ জন। তিনটি পরীক্ষায় পাস করে ০০৭ কিশোর গ্যাং বাহিনীর সদস্য হতে হয়। প্রথমত: অবশ্যই তাকে মাদকসেবী হতে হবে। দ্বিতীয়ত: তাকে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হতে হবে। তৃতীয়ত: এ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট, অপহরণ ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও বরগুনায় টিম ৬১, লারেলাপ্পা, হানীবন্ডসহ বিভিন্ন নামে একাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। সব মিলিয়ে এদের সদস্য সংখ্যা হবে সহস্রাধিক। বরগুনার মতো ছোট্ট একটি জেলায় সহস্রাধিক মাদক ব্যবসায়ী বা সন্ত্রাসী বাহিনী থাকলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়াই স্বাভাবিক। এই কিশোর গ্যাং গ্রুপ সদস্যদের বয়স ১২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। হাতে গোনা কয়েকজন লিডারের বয়স ৪০ এর মধ্যে।
তিনি আর জানান, বরগুনায় সড়ক পথ ছাড়াও বঙ্গোপসাগর হয়ে নৌপথে মাদকের বড় বড় চালান আসে। চলতি বছরের ২ এপ্রিল ঢাকা সদরঘাটে বরগুনা থেকে ছেড়ে যাওয়া সপ্তবর্না লঞ্চ এবং আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ৮ লাখ ইয়াবা র‌্যাব সদস্যরা আটক করেছে। সেসময় যে ৩ জনকে আটক করা হয়েছিল, তাদের দুজনের বাড়ি বরগুনায়। মিয়ানমার থেকে সাগর পথে এভাবে ইয়াবার চালান বরগুনায় আসে। যার একটা অংশ কিশোর বয়সী মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের কাছে চলে যায়। বরগুনায় অনেক ভূমিহীন পরিবারের সন্তান রয়েছে, যারা অত্যাধুনিক দামী টাকার মোটরসাইকেল চালায় এবং ৫০/৬০ হাজার টাকা দামের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে।
এদিকে বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির পক্ষ থেকে গত ১৫ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে ৭ দফা দাবীতে বরগুনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে। তাদের ৭ দফা দাবীগুলো হচ্ছে, বরগুনায় মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সড়ক পথ ও নৌপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের জন্য অত্যাধুনিক জলযানসহ একটি সি-প্লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। বরগুনায় একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র করতে হবে। সন্ধ্যার পরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও কোচিং বন্ধ রাখতে হবে এবং মাদক উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বরগুনার সকল গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থায়ী চেকপোস্ট বসাতে হবে এবং সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তল্লাশি করতে হবে। রিফাত হত্যাসহ বরগুনার সকল হত্যাকা- এবং মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বরগুনার ধূমপান বিরোধী আন্দোলনের সভাপতি ও মানবাধিকারকর্মী মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু জানিয়েছেন, বরগুনায় মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। এই মাদক ব্যবসায়ীরাই রিফাত শরীফকে হত্যা করেছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, বরগুনা জেলা শহরের প্রায় প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক গ্যাং ও লিডার রয়েছে। তারাই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাদকসেবী বানাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মাদক নিয়ে রিফাত শরীফের সঙ্গে সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই রিফাতকে মাদক দিয়ে নয়ন ফাঁসিয়েছিল। মাদক সম্পৃক্ততার দায়ে রিফাত জেলেও ছিল। পুরো ঘটনা সবার জানা। যদিও পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন দাবি করেছেন, রিফাত খুনের সঙ্গে মাদকের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। তবে তিনি আসামিদের অনেকেই মাদকসেবী ও কারবারি বলে স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় লোকজন বলছে, বরগুনা শহরে কান পাতলেই শোনা যাবে, রিফাত হত্যার আসামিরা মাদক ও মোটরসাইকেল চোরাচালানের সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। প্রধান আসামি, যে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে সেই নয়ন বন্ড ২৬০ জন সদস্য নিয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ ০০৭-এর মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকা- চালাত।
নিহত নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগম জানিয়েছেন, তার ছেলের সঙ্গে এমপি পুত্র সুনাম দেবনাথের একসময় ভাল সম্পর্ক ছিল। গত উপজেলা নির্বাচনের সময় সম্পর্কে একটু ফাটল ধরে।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক জানান, সুনামের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদে নয়ন মাদক চোরাকারবার ও মোটরসাইকেল চোরাচালানে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল। মাদক চোরাকারবার, চোরাচালান ও আরও ক্ষমতা লাভের আশায় সুনাম সেই গ্যাং গঠন করেন। এর আগেও সংবাদ সম্মেলনে করে সুনামের বিরুদ্ধে মাদকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছিলেন জুবায়ের। সুনাম দেবনাথ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার বাবা ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু যাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পান সে জন্য আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তার বাবার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে তার বিরুদ্ধে মাদকের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল ওই পক্ষ। তার দাবী, এখনও তারা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
বরগুনা থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, রিফাত শরীফকে যারা হত্যা করেছে তাদের মধ্যে নয়ন বন্ডের নামে ৮টি ও রিফাত ফরাজীর নামে ৪টি মামলা রয়েছে। যার অধিকাংশই মাদকের মামলা।
বরগুনা জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম জানিয়েছেন, বরগুনায় মাদকের কারণেই কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তার ধারষা, মাদকের কারণেই রিফাত শরীফকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নয়নের সঙ্গে মিন্নির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু রিফাত শরীফ হত্যার সঙ্গে মিন্নি জড়িত এটা তাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। তারা মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে চান। তার দাবী, বরগুনায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরও হত্যার ঘটনা ঘটবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *