বিশেষ প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে সবার ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার টিআইবির সঙ্গে দুদকের নতুন করে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে এ সাক্ষাৎ হয়।
এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুধু টিআইবি নয়, কমিশন সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চায়। দুর্নীতি প্রতিরোধে সবার ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে হলে উদ্ভাবনীমূলক ধারণা প্রয়োজন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা গেলে, তাই হবে দেশের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ। তাদের মাইন্ডসেট পরিবর্তনের জন্য যদি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাহলে দুদক এসব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তাই সমঝোতা স্মারকে সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনীমূলক কর্মসূচি রাখা সমীচীন হবে।’
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘কমিশন তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৮ হাজার সততা সংঘ গঠন করেছে। তাদের মাধ্যমে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এগুলো বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। টিআইবি এসব কার্যক্রমের ওপর গবেষণা করে ইমপ্যাকট অ্যাসেসমেন্ট করতে পারে। যাতে আমরা বুঝতে পারি আসলে কী ঘটছে! শিক্ষার্থীদের মনোজগতে আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াসে কি কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে? আমাদেরও বিষয়টি জানা দরকার। কারণ আমরা তাদের পেছনে যে অর্থ ব্যয় করছি তা জনগণের অর্থ।’
তিনি বলেন, ‘আইনি কারণেই কমিশনকে ছোট-বড় সব প্রকার মামলাই করতে হয়। কারণ ক্ষুদ্র দুর্নীতির বিষয়ে যিনি অভিযোগ করেন তারও আইনি প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই বিদ্যমান আইনে সিস্টেম সংযোজন করা গেলে চুনোপুঁটিদের মামলাগুলো হয়তো আইনি প্রক্রিয়ায় অন্যভাবে নিষ্পত্তি করা সম্ভব এবং এতে মামলা জট কমতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কমিশনের সক্ষমতার কিছুটা ঘাটতির কারণেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ থাকে তা হয়তো কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্মোচিত করা যায় না। সে কারণেই হয়তো কমিশনের মামলায় শতভাগ শাস্তি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তারপরও কমিশনের প্রায় ৭০ শতাংশ মামলায় সাজা হচ্ছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক পরিবর্তন। কমিশনের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বহুসংখ্যক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে এবং এখনও প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে।’
এ সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদকের সঙ্গে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এ প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টি থেকেই এর পাশে রয়েছি। আমরা দুদককে আরও শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি অত্যুক্তি হবে না যে, টিআইবি বর্তমান কমিশনের নিকট থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাচ্ছে।’
দুদক চেয়ারম্যানের উদ্দেশে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘আপনার অকপটতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ড সত্যিই প্রশংসনীয়। আমার বিশ্বাস মানুষ এটা পছন্দ করে।’