সাবেক পাঁচ মন্ত্রীর ‘কাঠগড়ায়’ বর্তমানরা

এইমাত্র জাতীয় রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো অজুহাত বা গাফিলতির পক্ষে সাফাই না গেয়ে এটিকে সমস্যাকে মনে করে তা মোকাবিলার আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সাবেক পাঁচ মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের জাসদ কার্যালয়ের সামনে সচেতনতামূলক সমাবেশে ১৪ দলের নেতা ও সাবেক মন্ত্রীরা এসব কথা বলেন। এদিন ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অব্যাহত রাখা ও ডেঙ্গু মুক্ত বাংলাদেশ গড়ের লক্ষ্যে ১৪ দলের তিনদিনের সচতেনতা কর্মসূচি শেষ হয়।


বিজ্ঞাপন

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যানমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

নেতারা বলেন, আসুন, আমরা ডেঙ্গুকে ঘায়েল করা বাদ দিয়ে একে অপরকে ঘায়েল করার রাজনীতি না করি। আমরা ডেঙ্গু ঘায়েলের রাজনীতি করে এর বিস্তার রোধ করি।

বৃষ্টির মধ্যেই প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষ করেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, আমরা দেশ জঙ্গিমুক্ত করেছি। দেশকে অশুভ রাজনীতিকদের হাত থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঁচিয়েছি। তবে কি আমরা এই মরণঘাতী ডেঙ্গু মশা নিধন করতে পারব না? দেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হয় তাহলে অবশ্যই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ডেঙ্গুমক্ত করতে পারব।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বছরব্যাপী ডেঙ্গু নিধন অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এডিস মশার উৎসমূল ধ্বংস করুন। এবারের অভিজ্ঞতা আমাদের চরম শিক্ষা দিয়েছে। আমরা যদি গাফিলতি করি, মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ না থাকি তাহলে এভাবেই আমাদের বারবার বিপদের মুখে পড়তে হবে।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমরা শুনেছি ডেঙ্গু আসলে এমনকিছু না, এটা ছেলেধরার মত গুজব। কিন্তু যারা সেই গুজবের কথা বলেছিল, তারাই কিন্তু এখন বলছে, এটা বিরাট সংকট। আসলে সময়ের কাজ যদি সময় মতো করতে পারতাম তাহলে জনগণের দুর্ভোগ হত না।’

সাবেক মন্ত্রী মেনন আরও বলেন, ‘এখন একটা নতুন কথা শুনছি যে, এটা বৈশ্বিক সমস্যা এবং অন্যান্য দেশে এর চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। আমার কথা হচ্ছে, কোন দেশে কত বেশি মানুষ মারা গেল, এটা আমার দেখার বিষয় না। আমার দেশের জনগণকে রক্ষা করতে পারছি কি না, সেটাই আমার দায়িত্ব। আর সেটাই জনগণ আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে। ’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, কোন অজুহাত, ব্যর্থতা বা গাফিলতির পক্ষে সাফাই গাওয়ার দরকার নাই। আমি মনে করি, ডেঙ্গু মশার সমস্যাটাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখে আমরা সেটাকে মোকাবিলা করব।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘কেউ কেউ ডেঙ্গুবিরোধী কথা বলে ষড়যন্ত্র করতে চাচ্ছেন। রাজনৈতিক ফসল তারা ‘ক্যাশ’ করতে চাচ্ছেন। কিন্তু আমরা বলতে চাই, যে অবস্থায় আছেন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফসল ক্যাশ করা আপনাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যানমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘সারাদেশ ডেঙ্গু মশায় আক্রান্ত। মানুষ এটাকে প্রতিরোধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মানুষকে ডাক দিয়েছেন ডেঙ্গু মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। তাই সকল স্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে যার যার বাড়ি, অফিস আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এইভাবে যদি আমরা সারাবছর যার যার দায়িত্ব পালন করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে ডেঙ্গু এভাবে আর আক্রান্ত করতে পারবে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *