নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতে আগত মুসল্লিরা জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া আর কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিদায়ী কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া। শনিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে মহানগর পুলিশের প্রধান এই কথা বলেন। আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতে আগত মুসল্লিরা জায়নামাজ ও বৃষ্টি হলে ছাতা সঙ্গে নিয়ে ঈদগাহে আসতে পারবেন। এর বাইরে কোনো কিছু সঙ্গে নিয়ে আসা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মুসল্লিদের জায়নামাজ ও ছাতা তল্লাশির পর সেগুলো নিয়ে ঈদগাহে প্রবেশের অনুমতি দেবে। ঈদগাহে কোনো ধরনের ব্যাগ, ছুরি, দিয়াশলাই ও ধাহ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তিনি বলেন, রাজধানীজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে সবচেয়ে বড় ও প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহ ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে। এসব ঈদ জামাতকে ঘিরে সুদৃঢ়-সুসমন্বিত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার জানান, ঈদগাহ মাঠে প্রবেশে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আবদুল গণি রোড, দোয়েল চত্বর, মৎস্য ভবন মোড়সহ কয়েকটি বেরিক্যাড থাকবে। এসব রাস্তা দিয়ে ঈদগাহের দিকে পায়ে হেঁটে আসতে হবে। ব্যরিক্যাডের ভেতরে সবাইকে তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। যারা জামাতে আসবেন তারা সঙ্গে দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, ছুরি, দিয়াশলাই নিয়ে আসবেন না। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, মাঠের প্রধান গেটে আবারো আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। সেখানে দৈবচয়নের ভিত্তিতে আরো ব্যপক তল্লাশি চালনো হতে পারে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদগাহে আগত মুসল্লিদের পুলিশকে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ঈদগাহে ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে। কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারি করা হবে। অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করবে। ঈদ উপলক্ষে আরো ৪-৫ দিন আগে থেকেই মহানগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ঈদ জামাতের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ঈদ জামাতকে ঘিরে জাতীয় ঈদগাহ ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ডিএমপি। এর মধ্যে পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, সোয়াট, সিটিটিসি, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ওয়াচ-টাওয়ার, আর্চওয়ে ও সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্য দিয়েই মুসল্লিদের ঈদ জামাতে প্রবেশ করতে হবে। ঈদ জামাতে প্রবেশে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আবদুল গণি রোড, দোয়েল চত্বর, মৎস্য ভবন মোড়সহ কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চৌকি থাকবে, থাকবে ব্যারিকেড। এসব রাস্তা দিয়ে ঈদগাহের দিকে হেঁটে আসতে হবে। ঈদগাহে আসা সাধারণ মানুষকে এসব তল্লাশি চৌকির আশপাশে গাড়ি রেখে ভেতরে ঢুকতে হবে। এই ব্যারিকেডের ভেতর ভিভিআইপি ছাড়া কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারবে না বলে জানান কমিশনার। কমিশনার আরো বলেন, সড়কে তল্লাশির পরও ঈদগাহের মেইন গেটে ঢোকার পথে মুসল্লিদের দৈবচয়নের ভিত্তিতে তল্লাশি করা হতে পারে। গোটা এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে এসব ক্যামেরার ফুটেজ রিয়েল টাইম নজরদারি করা হবে। যত্রতত্র কোরবানি না করার অনুরোধ জানিয়ে কমিশনার বলেন, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করার জন্য নগরবাসীকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে সিটি করপোরেশন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্জ্য সরিয়ে নিতে পারবে। কোরবানির বর্জ্য থেকে যেন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য নগরবাসীকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। এর আগে ঈদগাহ ময়দানে ডিএমপি কমিশনার স্পেশাল ওয়েপনস অ্যাড ট্যাকটিক্স (সোয়াট) এবং কে-নাইন (ডগ স্কোয়াড) দলের নিরাপত্তা মহড়া পরিদর্শন করেন।