কালো অধ্যায়ের নাম ২১ আগস্ট

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন জীবনী ঢাকা রাজধানী রাজনীতি সারাদেশ

ষড়যন্ত্র ও অশুভ তৎপরতা

মহসীন আহমেদ স্বপন : বর্ষপঞ্জির কালো অধ্যায়ের নাম ২১ আগস্ট। আগস্ট এলেই আতঙ্ক ঘিরে ধরে আমাদের। আগস্টের তিন-তিনটি ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল পুরো দেশকে। ১৫, ১৭ আর ২১ আগস্ট। আজ রক্তাক্ত একুশে আগস্টের সেই ভয়াল দিনটি। দেড় দশক আগে এইদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তখন বিএনপি-জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। মূলত আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চার দলীয় জোট সরকার রাষ্টযন্ত্র ব্যাবহার করে নৃশংসতম গ্রেনেড হামলা চালায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য এই ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আইভি রহমান ও অপর ২৪ জন নিহত হন। আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে দলের নেতা কর্মীরা বুধবার সকাল ৯ টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদীতে পুস্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। একই দিন বিকেল ৪টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য রাখবেন দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও এই হামলায় আরো ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। দেশের বৃহৎ এই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূণ্য করতে এ হামলা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আকস্মিক গ্রেনেড বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে মারাত্মক বিশৃংখলা, ভয়াবহ মৃত্যু ও দিনের আলো মুছে গিয়ে এক ধোয়াচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ঢাকা’র তৎকালিন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাৎক্ষণিকভাবে এক মানব বলয় তৈরি করে নিজেরা আঘাত সহ্য করে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেডের হাত থেকে রক্ষা করেন। মেয়র হা্িনফের মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত অস্ত্রোপাচার করার কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্পিন্টার শরীরে থাকার কারণে তার অস্ত্রোপাচার করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি ব্যাংকক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিকে শেখ হাসিনা গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও তাঁর শ্রবণ শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় উল্লেখযোগ্য নিহতরা হলেন, আইভি রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব:) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্ঝেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা). মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া। মারাত্মক আহতরা হলেন শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, প্রায়ত আবদুর রাজ্জাক, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা পারভীন, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দিপ্তী, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মল্লিক প্রমুখ।
এই তিনটি ভয়াবহ ঘটনায় বিশ্বের গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক পরিসরেও আলোচনায় এসেছিল বাংলাদেশ। ১৫ আগস্ট আমরা হারিয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাংলাদেশের স্রষ্টা তখনকার রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করেছিল সেনাবাহিনীর কয়েকজন বিপথগামী কর্মকর্তা এবং তাদের দোসররা। দেশী-বিদেশী চক্রান্তের অংশ ছিল এই হত্যাকান্ড। তাই তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিরোধ আসেনি কোথাও থেকে। যদিও ব্যাক্তিগতভাবে কেউ কেউ উদ্যোগী হয়েছিল,তাতে আত্মহুতির ঘটনাও ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্ট বাংলাদেশের আদর্শকে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টার শুরু তখন থেকেই। তারপরই মুছে গেছে মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শ। দেশের স্বাধীনতাবিরোধীরা পুনর্বাসিত হয়েছে, এমনকি তারা পেয়েছে জাতীয় পতাকাও।
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আগস্ট মাস আসলেই এক হয়ে মরণ কামড় দিতে উঠেপড়ে লেগে যায়। ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ দেড় দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট সরকার অর্থাৎ বিএনপি জামাতের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা করা হয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে। প্রধান টার্গেট ছিল তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। কারণ খুনিরা জানতো শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে পারলেই আওয়ামী লীগ তথা বাংলাদেশ আর কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুমহান মর্যাদা। তাইতো খুনিরা ভাবতো শেখ হাসিনার হাতে যদি বাংলাদেশ থাকে তবে কখনও পাকিস্তানের আদর্শ বাস্তবায়ন সম্ভব না। জাতির পিতাকে খুনিরা হত্যা করেছিল কিন্তু তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তাইতো খুনিদের রক্তের উত্তরসূরিদের মাথাব্যথার কারণ শেখ হাসিনা। ওরা জানে বঙ্গবন্ধুর রক্ত যাঁর ধমনিতে বহমান তাঁকে নিচিহ্ন করতে না পারলে, ওদের মিশন সাকসেস হবেনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ চিন্তা চেতনা শক্তি সাহস সততা সবই শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাঙালি জাতির কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতার মূলমন্ত্র নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে বর্বরোচিত ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের সমাবেশে। খুনিরা আরও জানতো শেখ হাসিনা দাঁড়িয়ে গেলে দাঁড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর অবয়ব বাংলাদেশ পূরণের অগ্রনায়ক একমাত্র শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ, বাঙালি জাতির আশা আকাঙ্খার মূর্তপ্রতীক শেখ হাসিনা। তিনি যদি এই দেশের আবার হাল ধরেন তবে খুনিদের মনের আশা কখনও পূরণ হবে না। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বিএনপি জামাত তা দেখেছিল ১৯৯৬ সালে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেই বাঙালি জাতির ভাগ্যের উন্নয়ন সাধন করেছিল, অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধের বাংলাদেশ গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের সঠিক চর্চা হয়। বিকৃত ইতিহাসের খলনায়কদের বিচার হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার শুরু করা, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার সোচ্চার হয়। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পরে দীর্ঘ ২১ বছরের গ¬্যানি মুছে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বিএনপি জামাত তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানের আদর্শকে বাস্তবায়ন করার জন্য আবারও বিএনপি জামাত উঠেপড়ে লেগে যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার উত্তরসূরি বিএনপি জামাত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে অর্থাৎ বাংলাদেশের ভূখ-কে জলাঞ্জলি দিয়ে, মু্ক্িতযুদ্ধের আদর্শের পরিপন্থী রাষ্ট্র তৈরি করার নীলনকশা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি উৎক্ষাত করতে উঠেপড়ে লেগে যায়।
অভিযোগ আছে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এই হত্যাকান্ডের প্রতিকারের ব্যাপারে তৎকালীন বিএনপি সরকার নিলিপ্ত ভ’মিকা পালন করেছিল। শুধু তাই নয় এ হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে সরকারের কর্মকর্তারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত পাঁচটি গ্রেনেড ধ্বংস করে দিয়ে প্রমান নষ্ট করার চেষ্টাও করা হয়েছিল। পরবর্তি সময়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হলে বিএনপি সরকারের প্রভাবশালী স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুরজ্জামান বাবর ঘটনার সাথে তারেক রহমান জড়িত আছেন বলে দাবি করে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাধর বড় পুত্র তারেক রহমান ‘এ হামলার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন।’ এই হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তি অথবা গোষ্ঠীর সন্ধানদাতার জন্য সেসময় বাবর এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। হামলার পর বাবরের তত্বাবধানে একটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এবং এতে জজ মিয়া নামে এক ভবঘুরে, একজন ছাত্র, একজন আওয়ামী লীগের কর্মীসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অথচ পরবর্তী তদন্তে তাদের কারো বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুকূল পরিস্থিতিতে সরকার এ হামলার পুনারায় তদন্তের নির্দেশ দিলে এবং সাড়ে তিন বছর পর বিলম্বিত পুলিশ চার্জ শিট নথিভুক্ত করা হয়। অথচ বিএনপি’র কতিপয় সংসদ সদস্য এই জঘন্য হামলাকে আওয়ামী লীগের পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেছিল। পুনরায় তদন্তে পুলিশ এই হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে চিহ্নিত করে। এর আগে বেশ কয়েকটি বিদেশী মিশন যেমন ব্রিটিশ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, ইউএস ফেডারেল ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং ইন্টারপোল বাংলাদেশী তদন্তকারীদের যোগ দিলেও এসব প্রতিষ্ঠান বিএনপি সরকার তাদের সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ করেছিল। একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে গত বছরের ১০ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। এই রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল মামলা শুনানীর অপেক্ষায় আছে। বর্তমানে শুনানীর জন্য পেপারবুক তৈরীর কাজ চলছে। আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সকল নেতা, কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের ২১ আগস্ট ‘গ্রেনেড হামলা দিবস’ যথযথো মর্যাদায় পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। একইসাথে তিনি আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটি স্মরণ ও পালন করার আহ্বান জানান।
সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছর পরও জঙ্গিবাদের অপশক্তির হাত থেকে এখনো বাংলাদেশ মুক্ত নয় বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, জঙ্গিদের মদদ দানকারী রাজনৈতিক শক্তি এখনো বিদ্যমান। একমাত্র জনসচেতনতা ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর রাজনীতির অবসানই হতে পারে এ থেকে মুক্তির উপায়। আর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিরা এখন অনেকটাই কোণঠাসা। তারপরেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক রয়েছেন তারা। ১৭ই আগস্ট দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছরে দেশের জঙ্গিবাদের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে এ কথা বলেন তারা। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট। মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩টি জেলায় ১৫ মিনিটের ব্যবধানে ৫০৩টি স্থানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জেএমবি। ১৯৯২ সালে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করলেও মূলত এই হামলার মধ্য দিয়েই নিজেদের অস্তিত্ব ও সক্ষমতার জানান দেয় সংগঠনটি। ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে মামলা হয় ১৬১টি। এর মধ্যে ১৪৩টি মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত বিচার শেষ হয়েছে ১২৮টি মামলার। এখনো বিচারাধীন ৩৩টি মামলা। এই ঘটনায় বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয় ১ হাজার ৯৬৭ জন।
১৪ বছরে দেশে জঙ্গিবাদের ধরণ যেমন বদলেছে, বদলেছে তাদের মোকাবিলার পদ্ধতিও। সবকিছু মিলিয়ে জঙ্গিরা কিছুটা পিছু হটলেও এখনো বাংলাদেশ ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার। তিনি বলেন, যে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছে, এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এত বছর পরও আমরা এই অপশক্তির হুমকি থেকে মুক্তি হতে পারি নাই। তার কারণ এদের পিছনে যে রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে সেটা নির্মূল করা যায়নি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *