বিশেষ প্রতিবেদক : সম্প্রতি বন্যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় নষ্ট হয়েছে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। এতে ধানের চারা সংকটে রয়েছেন বন্যা কবলিত কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উঁচু জমিতে সরকারিভাবে দ্রুত বীজতলা তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। একইসঙ্গে তৈরি করা হবে আড়াই হাজার ভাসমান বীজতলা। চাষিদের স্বল্প সময়ে সবজি উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার পরামর্শ কৃষি অর্থনীতিবিদদের।
পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যায় জনদুর্ভোগের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫৫ লাখ হেক্টর জমিতে আমন ধানের জন্য তৈরি ১১ হাজার ৮’শ হেক্টর আমন বীজতলা। পানি নেমে যাওয়ায় এবার ধানের চারার সংকটের মুখোমুখি আমন চাষিরা।
অন্যদিকে, জামালপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলার নিচু জমিতে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পুনর্বাসনে ক্ষতিগ্রস্ত এসব এলাকার চাষিদের উঁচু জমি ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের জমিতেও বীজতলা তৈরির জন্য বীজ ও সার দেয়া হচ্ছে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। একইসঙ্গে দুই হাজার ৫০০টি ভাসমান বেডেও তৈরি করা হবে ধানের চারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ও সরজমিন উইং ড. মো. আবদুল মুঈদ বলেন, বীজতলা যে নষ্ট হলো; এটাকে কভার করার জন্য সরকারিভাবে আমরা কর্মসূচি নিয়েছি। সেই সাথে আমরা সরকারিভাবে বীজতলা করতেছি। এছাড়াও কৃষকদের নিজস্ব জমিতে বীজতলা তৈরি করার জন্য তাদের বীজ ও সার দিচ্ছি।
আমন ধান রোপণ সম্ভব নয় এমন জমিগুলোতে মৌসুমি অন্যান্য ফসলের জন্য কৃষকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ।
তিনি আরো বলেন, আগস্টের শেষ সপ্তাহে ৪০ হাজার কৃষকদের বীজ ও সার দেয়া হবে।
বন্যায় পচে গেছে পটল-করলা-ঝিঙ্গা, লাউসহ লতা জাতীয় ৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির সবজি ও ৬৬০ হেক্টর জমির মরিচ। পানি নেমে যাওয়া এসব জমিতে স্বল্প সময়ে চাষাবাদ যোগ্য সবজি চাষে কৃষককে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা।
কৃষি অর্থনীতিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে যেসব সবজি উৎপাদন করা যায় সেগুলো চাষাবাদ করা। যেটা হয়তো ৩০-৪০ দিনের মধ্যে তুলতে পারবো।
বন্যার আগাম সতর্কবার্তা ও পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম জবাবদিহিমূলক করতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালনের পরামর্শ এই কৃষিবিদের।