ছড়িয়ে পড়ছে গ্রাম-গঞ্জেও
বিশেষ প্রতিবেদক : অবৈধ ভিওআইপি কলের কারণে দেশে বৈধ পথে বিদেশ থেকে কল আসার পরিমাণ কমেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ। এতে সরকারের রাজস্ব কমেছে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ভিওআইপি কার্যক্রম রাজধানী ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে জেলা পর্যায়ে।
মোবাইল অপারেটরগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট কমানো না হলে ভিওআইপি কার্যক্রম রোধে কোন পদক্ষেপই কাজে আসবে না।
ভিওআইপি- সরকার অনুমোদিত গেটওয়ে এড়িয়ে কম খরচে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে বিদেশ থেকে কথা বলার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে দেশে কল আসলে কোন রাজস্ব পায় না সরকার।
অবৈধ ভিওআইপি বন্ধে ২০১৫ সালে সেলফোন সংযোগ ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্তে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্টেশন পদ্ধতি চালু করে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানও চললেও বন্ধ হচ্ছে না ভিওআইপি কার্যক্রম।
বিটিআরসির হিসেবে, দেশে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি কল হচ্ছে অবৈধ ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
মোবাইল অপারেটররা বলছে ২০১৫ সাল থেকে দু’দফায় আন্তর্জাতিক কল রেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে আড়াই সেন্ট করা হয়। পাশাপাশি বেড়েছে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোর মতো ওভার দ্য টপ সেবার ব্যবহার। এতে বিদেশি কল প্রতিদিন গড়ে ১২ কোটি মিনিট থেকে কমে দাড়িয়েছে প্রায় সাড়ে চার কোটিতে। অর্থাৎ প্রায় ৮ কোটি কল অবৈধ ভিওআইপিতে হচ্ছে। এতে রাজস্ব আয় দুই হাজার কোটি থেকে কমে দাড়িয়েছে ৯শ’ কোটিতে।
ভিওআইপি বন্ধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও আন্তর্জাতিক কল রেট কমানোর পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
মোবাইল অপারেটর রবির হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স সাহেদ আলম বলেন, আমার বৈধ পথে যে কলটা আসতো সেখান থেকে আমি যদি ভিওআইপিতে চলে চাই তাহলে ২৩ পয়সা লোকসান হয়। তাহলে আমি কেন যাবো।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, আমরা আইজিডাব্লিউ থেকে যদি ১ দশমিক ৭ সেন্টে পাই তাহলে কিন্তু আড়াই সেন্ট দিয়ে নিয়ে আসছে। এজন্য যদি ইন্টারন্যাশনাল কলরেট যদি কমানো হয় তাহলে অবৈধ ভিওআইপি কমে যাবে।
তবে বিটিআরসি বলছে আন্তর্জাতিক কলরেট কমানো হবে না। বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, কলরেট বাড়ছে আমরা কী করবো এটা বলে পার পাবে না। কলরেট সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাড়ে। আমাদের আইন আছে যে যার সিম ব্যবহার করে অনিয়ম হবে সেই অপারেটর দায়ী হবে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক কল থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের ৪০ শতাংশ পায় বিটিআরসি ২০ শতাংশ আইজিডব্লিউ, সাড়ে ১৭ শতাংশ আইসিএক্স এবং সাড়ে ২২ শতাংশ সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অপারেটর বা এক্সেস নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রদানকারী পায়।