নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জহিরুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মোঃ কামরুল হাসান এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই কামরুল ইসলাম চৌধুরী সোমবার ১৩ জুন সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স’ সহ খুলশী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিএমপি’র পাঁচলাইশ মডেল থানার মামলা নং- ০৯, তারিখ- ০৮/০৪/২০২২ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড এর মূল হোতা শওকত আলী (৬৫)’কে গ্রেফতার করে।
গত ৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখ পাঁচলাইশ থানাধীন নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি ৩নং রোডের ৬নং বাসার সেফটিক ট্যাঙ্কি পরিস্কারের সময় উক্ত ট্যাঙ্কির ভিতরে একজন অজ্ঞাতনামা মহিলার গলিত লাশ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় মামলা রুজু হওয়ার পর উক্ত মহিলার লাশের পরিচয় সনাক্ত, হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন করা হয়। পরবর্তীতে গত ২৯ মে ২০২২ তারিখ মামলাটির তদন্তভার ডিবি (উত্তর) বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
হত্যাকান্ডের কোন প্রকার ক্লু না থাকায় অধিক গুরুত্বের সহিত তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। মৃতদেহ বিকৃত, গলিত এবং দেহ হতে মস্তক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না।
তাছাড়া আশপাশের সিসিটিভিতে দীর্ঘদিনের ফুটেজ সংরক্ষিত না থাকায় অপরাধী’কে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এমজিএইচ গ্রুপের অফিসের সকল স্তরের স্টাফ’দের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তের অংশ হিসাবে সকল স্টাফের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাচাই করা হয়। বেশিরভাগ স্টাফদের নজরদারীতে রাখা হয়। তন্মধ্যে কতিপয় স্টাফ’দের মোবাইল ফোনের কললিস্ট নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
এক পর্যায়ে ধৃত ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য এবং সিডিআর এ প্রাপ্ত তথ্য গরমিল পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করে। উক্ত ব্যাক্তি এমজিএইচ গ্রুপের নাসিরাবাদ শাখার ক্লিনার হিসাবে নিযুক্ত ছিল। ভিকটিম উক্ত ব্যাক্তির ২য় স্ত্রী।
তাদের মধ্যে বিগত ২০১৩ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে অনুমান ৩/৪ বছর পর পুনরায় তারা এক সাথে স্বামী-স্ত্রী রূপে বসবাস করতে থাকে। তাদের পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ৯ নভেম্বর ২০২১ সালে উক্ত ব্যাক্তি তার ২য় স্ত্রী’কে শ্বাসরোধ করে খুলশী থানাধীন ডিজেল কলোনীস্থ ভাড়া বাসায় হত্যা করে। এরপর ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে কৌশলে সিএনজি যোগে নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩নং রোডের ৬নং বাসার অফিসে এনে সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেয়। ভিকটিমের আংশিক পরিচয় পাওয়া গেলেও বিস্তারিত পরিচয় সনাক্তের জন্য তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।