নিজস্ব প্রতিবেদক : সেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি এন্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএফ) জানিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৯৭ জন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের রিচার্জফুল পল্টন সিটি টাওয়ারে সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বজ্রপাতের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে এসএসটিএফ।
দেশের জাতীয় এবং আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের স্ক্রল থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে এসএসটিএফ’র সাধারণ সম্পাদক মো. রাশিম মোল্লা বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে ২৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই ৭ মাসে বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ৯৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৩০ জন নারী, ৬ জন শিশু, ৮ জন কিশোর-কিশোরী এবং ২০২ জনই পুরুষ।
রাশিম জানান, বজ্রপাতে এ বছর সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরা জেলায়। এ জেলায় চলতি বছরে ২২ জন নিহত হয়েছেন।
তিনি জানান, ধান কাটার সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এরপর বেশি নিহত হয়েছে বৃষ্টিতে ভেজা ও বজ্রপাতের সময় মাছ ধরতে গিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের গবেষণা সেলের নির্বাহী প্রধান আব্দুল আলীম বলেন, বজ্রপাত বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই, কারণ এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি সচেতন হওয়া যায়।
যেসময় বজ্রপাত হবে সেসময় যদি নিরাপদ স্থানে বিশেষ করে ছাদওয়ালা বাড়ি, কিংবা গাছের একটু দূরে অথবা খোলা মাঠে থাকলে মাটির সঙ্গে নুয়ে থাকা যায় তাহলে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।
আব্দুল আলীম বলেন, সচেতনতার পাশাপাশি প্রতিরোধের জন্য বজ্রপাত নিরোধক দন্ড বসানো উচিত। এটি খুবই কার্যকর। রাজধানীর পুরান ঢাকাতে এসব বজ্র-নিরোধক দন্ড বানানো হয়। এসব বিষয়ে সরকারকে গুরুত্বসহকারে নজর দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
রাশিম মোল্লা জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে ১০ জন পুরুষ এবং ১ জন নারীসহ নিহত হয়েছেন ১১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ জন পুরুষ, ২জন নারী ও ২জন কিশোরসহ ৮ জন।
মার্চ মাসে ৩ জন পুরুষ ও ২ জন শিশুসহ মারা গেছেন ৫ জন। ২ জন শিশুসহ আহত হয়েছেন ৩ জন। এপ্রিল মাসে ১৭ জন পুরুষ, ২জন নারী ও ১ জন কিশোরসহ নিহত হয়েছেন ২০ জন। সেই সঙ্গে ৭ জন পুরুষ ও ১ জন নারীসহ আহত হয়েছেন ৮ জন।
মে মাসে ৪৮ জন পুরুষ, ৮ জন নারী ও ১ জন শিশু এবং ৩ জন কিশোরসহ নিহত হয়েছেন ৬০ জন। সেইসঙ্গে ১৫ জন পুরুষ, ৭ জন নারী ও ২ জন শিশুসহ আহত হয়েছেন ২৪ জন। জুন মাসে ৫০ জন পুরুষ, ১১ জন নারী, ৩জন শিশু ও ২ জন কিশোরসহ নিহত হয়েছেন ৬৬ জন। আহত হয়েছেন ১২ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ৩ জন শিশু এবং ১ জন কিশোরসহ ১৮ জন।
জুলাই মাসে ৪৩ জন পুরুষ ও ৪ জন নারীসহ নিহত হয়েছেন ৪৭ জন। আহত হয়েছেন ২৫ জন। এর মধ্যে ২ জন নারী এবং ২৩ জনই পুরুষ। আগস্ট মাসে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ৩১ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ২ জন শিশুসহ ৩৭ জন। আহত ৭ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ১ জন শিশু ও ১ জন কিশোরসহ ১১ জন।