নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পাঠাও রাইডারের চুরি হওয়া মোটর সাইকেল উদ্ধার সহ ঘটনার সহিত জড়িত ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা।
পাঠাও রাইডার মোঃ সিরাজুল মোস্তফা তুহিন একজন মোটর সাইকেল রাইডার। তিনি পাঠাও ও উবারের মাধ্যমে মোটর সাইকেল ভাড়া চালাইয়া জীবিকা নির্বাহ করেন। আসামীগণ সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সাঈদ (২০), পিতা-মোঃ নাছির, মাতা-মানু আক্তার, সাং-জনগন পাড়া, ২নং ওয়ার্ড, ১১নং ফতেহপুর ইউপি, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম মামলার ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে বাদীর সহিত সখ্যতা গড়িয়া তুলে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ দুপুর ২ টা ৪৯ মিনিটের সময় আসামী মোঃ সাঈদ (২০) বাদী মোঃ সিরাজুল মোস্তফা তুহিন’কে ফোন করতঃ মোটর সাইকেল চালানো শিখবে মর্মে মোটরসাইকেল সহ অক্সিজেন মোড়ে যাইতে বলে।
আসামী মোঃ সাঈদ এর কথামতো বাদী গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে বিকাল অনুমান ৩ টা ১৬ মিনিটের সময় অক্সিজেন এলাকায় তাহার মালিকানাধীন মোটরসাইকেল TVS Metroplus (রেজিঃ নং-চট্টমেট্রো-হ-২০-১৮৬৯) নিযে যায়। অক্সিজেন এলাকায় পৌছালে আসামী সাঈদ বাদীকে বলে যে, অনন্যা আবাসিক এলাকায় গিয়া মোটর সাইকেল শিখবে।
আসামীকে নিয়া বাদী অনন্যা আবাসিক এলাকায় যায় এবং তথায় মোটর সাইকেল চালানো শিখাইতে বলে। অনন্যা আবাসিকে পৌছাইয়া আসামী সাঈদ মোটর সাইকেলের সামনে বসে এবং বাদীকে পিছনে বসায়।
একপর্যায়ে বাদীর ডান পায়ের স্যান্ডেল খুলে মাটিতে পড়ে গেলে তিনি তাহার স্যান্ডেল কুড়িয়ে আনতে মোটর সাইকেল থেকে নামে। তখন আসামী সাঈদ বাদীর মোটর সাইকেলের গতিবৃদ্ধি করিয়া মোটরসাইকেল নিয়া ঐ স্থান হইতে দ্রুত পালাইয়া যায়।
উক্ত ঘটনায় পাঠাও রাইডার মোঃ সিরাজুল মোস্তফা তুহিন বাদী হয়ে আদালতে সিআর মামলা নং-৮২/২০২২ (হাটহাজারী), ধারা-৩৭৯/৪২০ পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন। তৎপ্রেক্ষিতে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা মামলাটির তদন্ত কার্মক্রম শুরু করে।
পুলিশ সুপার পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলা এর হাওলা মতে এসআই (নিঃ) এসএম রেজাউল হাসান পাটোয়ারী’কে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তিনি এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্তের লক্ষ্যে পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি জনাব কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান, পিপিএম-সেবা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) এসএম রেজাউল হাসান পাটোয়ারী এর নেতৃত্বে পিবিআই চট্টগ্রামের একটি অভিযানিক দল গত ১৫ জুন, হাটহাজারী থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা কর।
উক্ত অভিযান পরিচালনা কালে ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতার কৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে, মোঃ সাঈদ (২০), পিতা-মোঃ নাছির, মাতা-মানু আক্তার, সাং-জনগন পাড়া, ২নং ওয়ার্ড, ১১নং ফতেহপুর ইউপি, মোঃ ফয়সাল করিম (১৯), পিতা-মোঃ তঞ্জু মিয়া, মাতা-গুলজার বেগম, সাং-পশ্চিমপাড়া, জোবরা, ৩নং ওয়ার্ড, ১১নং ফতেপুর ইউপি এবং মোঃ ইসমাইল হোসেন @বাবু (৩০), পিতা-ফকির আহম্মদ, মাতা-আলবালা খাতুন, সাং-এনায়েতপূর (আস্কর আলীর বাড়ী), সর্বথানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ বাবুর দেখানো ও সনাক্ত মতে বাদীর TVS Metroplus মোটর সাইকেল (যাহার রেজিঃ নং-চট্টমেট্রো-হ-২০-১৮৬৯, ইঞ্জিন নং-CF1KL1500003, চেসিস নং-PS625CF1X L6P33140, মূল্য অনুমান ১,১৫,০০০ (এক লক্ষ পনের হাজার টাকা) উদ্ধার পূর্বক উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়।
এই বিষয়ে বাদী মোঃ সিরাজুল মোস্তফা তুহিন হাটহাজারী মডেল থানায় মামলা নং-১৮, তারিখ-১৬/০৬/২০২২ইং, ধারা-৪২০/৩৭৯/৪১১ পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করেন। রুজুকৃত মামলাটি পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কর্তৃক অধিগ্রহণ করে।
গ্রেফতারকৃত উপরোক্ত আসামীদেরকে গত ১৬ জুন আদালতে সোপর্দ করা হইয়াছে। ঘটনার সাথে জড়িত ও সংঘবদ্ধ চোর চক্রের পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রহিয়াছে।