নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই আমিনবাজারে ডাম্পিং স্টেশনে বর্জ্য ফেলে দূষণের দায়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) সর্বোচ্চ অর্থদণ্ড দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। শনিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই সুপারিশ করা হয়। এর আগে, গত ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, তাদের (ডিএনসিসি) ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ড অবৈধ। পরিবেশ অধিদপ্তর আগেও এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছে, তারা কোনো সাড়া দেয়নি। এই বর্জ্য স্টেশন বন্ধ করার জন্যও তাদের চিঠি দেওয়া হবে।
পরিবেশ দূষণের জন্য জরিমানা করার বিধান আছে দাবি করে তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। সিটি করপোরেশন এখানে কোনো বিশেষ সুবিধা পেতে পারে না।
কমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে মন্ত্রণালয় শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব বলেও জানিয়েছে সাবের হোসেন চৌধুরী।
জানা যায়, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৫০ একর জমিতে নির্মাণ করা হয় আমিনবাজার বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন। এরপর ২০০৭ সাল থেকে সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুরু হয়। এই প্ল্যান্টের মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়নি। তারপরও সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালিয়ে যাচ্ছে ডিএনসিসি।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকের তথ্য অনুযায়ী, শুরুতে আমিনবাজার ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ‘স্থানগত ছাড়পত্র’ পায় সিটি করপোরেশন। তখন ঢাকায় অবিভক্ত সিটি করপোরেশন ছিল। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট’ করে প্রতিবেদন দিতে হয়। সেই প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে কাজ করার জন্য ছাড়পত্র দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
এদিকে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হলেও বর্তমানে কাজ চলছে ৭৩ একর জমির ওপর। এতে জমির মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, আমিনবাজারের বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন নিয়ে আলোচনা ওঠার পর পরিবেশ অধিদপ্তর ডিএনসিসিকে তিনটি নোটিশ দেয়। এটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হলেও তাতে রাজি হয়নি ডিএনসিসি। এ ব্যাপারে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এসময় ডিএনসিসি ওই স্টেশন বন্ধে রাজি না হয়ে উল্টো পরিবেশ অধিদেপ্তরকে তাদের ‘এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট (ইএমপি)’ তৈরি করে দিতে বলে। জবাবে অধিপ্তর বলেছে ইএমপি করার কাজ তাদের নয়। তারা এ ব্যাপারে পরামর্শ দেবে।
সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার, মোজাম্মেল হোসেন, দীপংকর তালুকদার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার।