অর্থনৈতিক প্রতিবেদক ঃ ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত এবং জ্বালানির আকাশছোঁয়া দামের প্রতিক্রিয়ায় এনার্জি ইমার্জেন্সি ঘোষণা করেছে হাঙ্গেরি সরকার। গতকাল বুধবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে। খবর আল জাজিরা।
প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের চিফ অফ স্টাফ গারগেলি গুলিয়াস রাজধানী বুদাপেস্টে একটি সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং এর ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ইউরোপ মহাদেশজুড়ে একটি জ্বালানি সংকট তৈরি করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই মুখপাত্র বলেন, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞাগুলো ইউরোপজুড়ে শক্তির দাম নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ইউরোপের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যেই শক্তি সংকটে পড়ে গেছে।
গুলিয়াস বলেন, আগামী শরৎ ও শীত মৌসুমে যখন গ্যাসের চাহিদা আরও বাড়বে তখন ইউরোপে পর্যাপ্ত গ্যাস থাকার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হাঙ্গেরি তার অভ্যন্তরীণ শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াবে। তারা নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাসের বার্ষিক উৎপাদন ১.৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার থেকে বাড়িয়ে দুই বিলিয়নে উন্নীত করবে। এছাড়া লিগনাইট (বাদামী কয়লা) নিষ্কাশন বাড়াবে এবং বর্তমানে অ-কার্যকর লিগনাইট কার্যকর করবে।
গুলিয়াস আরো জানান, যে কোনো ধরনের জ্বালানি রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হবে এবং হাঙ্গেরির একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও পরিচালনার সময় বাড়ানোর মাধ্যমে তার উৎপাদন বাড়াবে। ব্যবস্থাগুলো আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে।
এখন পর্যন্ত হাঙ্গেরির গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রয়েছে দাবি করে গুলিয়াস বলেন, কোথাও জ্বালানির অপব্যয় সহ্য করা হবে না।
উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি রাশিয়া থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং গত বছর প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রয়ের জন্য রাশিয়ান শক্তি সংস্থা গ্যাজপ্রমের সাথে ১৫ বছরের চুক্তি সই করেছে। দেশটি তার তেলের প্রায় ৬৫ শতাংশ এবং গ্যাসের ৮৫ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করে।
মস্কো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর ইইউ রাশিয়ার তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেছিল। তবে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী অরবান এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, রাশিয়ান তেল ব্লক করা হলে সেটি তার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেবে।
পরে আলোচনার মাধ্যমে ইইউ রাশিয়ান জ্বালানি বয়কটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলেও হাঙ্গোরিসহ কয়েকটি রাষ্ট্রের ব্যাপারে কিছু ছাড় দেওয়া হয়।