নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মতিঝিল ফকিরাপুল এলাকায় ‘ইয়াং ম্যান্স ক্লাব’র ক্যাসিনোতে (জুয়ার আসর) র্যাবের অভিযান চলছে। এই ক্যাসিনোর মালিক মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া। র্যাবের সদস্যরা তার বাসা ঘিরে রেখেছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রাজধানীর মতিঝিলের কয়েকটি ক্যাসিনোতে র্যাবের অভিযান চলছে। এর প্রেক্ষাপটে খালেদ ভূইয়ার বাসা ঘিরে রাখা হয়েছে।
সন্ধ্যায় র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার নেতৃত্বে ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চলছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। ঘটনাস্থলে দেখা যায়, অভিযানকে কেন্দ্র করে ক্যাসিনোর ভেতরে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। চারদিকে র্যাবের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী।
বুধবার দুপুরের পর গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসা এবং ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান শুরু করেন র্যাব সদস্যরা।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, খালেদ ভুঁইয়াকে ধরতে তার বাড়ি ঘিরে অভিযান চালানো হচ্ছে। আর জুয়া চলছে এমন খবরের ভিত্তিতে ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হচ্ছে।
শাহজাহানপুরের রেলওয়ে কলোনিতে বেড়ে ওঠা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ফকিরাপুলের এই ক্লাবের সভাপতি। ওই ক্লাব থেকে ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানিয়েছেন।
আটকদের সবাইকে উত্তরায় র্যাব সদরদপ্তরে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে খালেদ আছেন কি না, তা জানাননি র্যাব কর্মকর্তারা। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে র্যাবের কালো গ্লাসের একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে ক্লাব থেকে বেরিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটির প্রভাবশালী নেতা খালেদকে ধরতে অভিযান চালাল র্যাব। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাদাবির অভিযোগে সমালোচনার মুখে থাকা রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা ‘শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ’ বলে মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে, যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।