নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহন ও যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস বা সিএনজির যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি সংঘটন করার অপরাধে বিদেশি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র সহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা যথাক্রমে, মোঃ সুমন চৌকিদার ওরফে সুমন মিয়া, মোঃ মোস্তফা, মোঃ আরিফ হোসেন, মোঃ পলাশ, মোঃ করিম, মোঃ হাসান, রিপন ওরফে আকাশ, জয়নাল আবেদিন, মোঃ ওমর ফারুক ফয়সাল, রাসেল ও মোঃ হাফিজুল ইসলাম।
গতকাল সোমবার ২৬ জুলাই, দিবাগত রাতে মিটফোর্ড হাসপাতালের পানির পাম্পের দক্ষিণ পাশে অভিযান চালিয়ে একটি পিকআপ সহ তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
বুধবার ২৭ জুলাই, সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ সংক্রান্তে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের নিকট সংবাদ আসে পুরান ঢাকা, মিটফোর্ড, সিলেট হাইওয়ে রোডে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মিটফোর্ড হাসপাতালের পানির পাম্পের দক্ষিণ পাশে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রথমে মালবাহীট্রাক, পিকআপ বা মাইক্রোবাস ও সিএনজিতে থাকা যাত্রীদের টার্গেট করে। এরপর সেসব গাড়ির পিছু নিয়ে নির্জন স্থান বুঝে নিজেদের ব্যবহৃত পিকআপ দিয়ে ওই গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দেয়। পরবর্তী সময়ে বিদেশি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সবর্স্ব নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা মহানগর সহ টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর সহ বিভিন্ন জেলার মহাসড়ক ও জুয়েলারী দোকানে ডাকাতি করেছে বলে স্বীকার করেছে। এরা সকলেই পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতাকৃতদের হেফাজত থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ১টি বড় ছোরা, ১টি রামদা, ২টি লোহার তৈরি চাপাতি, পুরাতন পাটের রশি, ১টি পুরাতন গামছা, ১টি পিকআপ ও ৫ টিসিএনজি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতি করার সময় কেউ বাধা দিলে এদের সর্দার সুমন চৌকিদার খুন করতেও দ্বিধা করেনা।
সুমনের বিরুদ্ধে খুন সহ ডাকাতি ও দস্যুতার মোট ১৬ টি মামলা ও ৫ টি গ্রেফতারী পরোয়ানা মূলতবী রয়েছে। আর অন্যান্যদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এবার কোতয়ালী থানায় অস্ত্র ও ডাকাতির মামলা রুজু হওয়ায় আরো দুটো মামলা যুক্ত হলো।
ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ, বিপিএম এর নির্দেশনায় কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল আলম মুজাহিদ এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানটি পরিচালিত হয়।