দেশের প্রতিটি গণহত্যার সঙ্গে বিএনপি জামায়েত জড়িত– মাহবুবউল আলম হানিফ

Uncategorized রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিএনপি আদর্শিক ও রাজনৈতিকভাবে খুনির দল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি গণহত্যার সঙ্গে বিএনপি জড়িত।

২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল— স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারলে পাকিস্তানি ভাবধারায় রাষ্ট্র গঠন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে।

গত শুক্রবার ২৬ আগস্ট সকাল ১০টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ‘১৫ ও ২১ আগস্ট বাঙালি জাতির নেতৃত্ব নির্মূলে নীলনকশা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনাসভার আয়োজন করে রিসার্চ অ্যান্ড ডায়ালগ ইন্টারন্যাশনাল (আরডিআই)।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, গ্লোবাল টিভির সিইও সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা ও বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন আরডিআইর চেয়ারম্যান, শিক্ষাবিদ ও ফোকলোরিস্ট অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান। সঞ্চালনা করেন আরডিআইর নির্বাহী পরিচালক ড. মিঠুন মুস্তাফিজ।

মাহবুবউল আলম হানিফ আরও বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান রাজনীতিবিদি নয়; বরং পাকিস্তানি ভাবধারার পৈশাচিক, বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি। প্রত্যেকটা গণহত্যায় এই পরিবারের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গণহত্যা একই যোগসূত্র পাওয়া যায়। একাত্তরের গণহত্যাও একই জায়গা থেকে পরিচালিত।

হানিফ বলেন, কিছু কিছু সুশীল রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলেন। কার সঙ্গে সমঝোতার কথা বলেন? রাজনীতিবিদের সঙ্গে রাজনীতিবিদের সমঝোতা হতে পারে, কথা হতে পারে; কিন্তু হত্যাকারী, বিকৃত মানসিকতাসম্পন্নদের সঙ্গে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।

২১ আগস্ট নিয়ে বিএনপি ২০০৪ সালে মিথ্যাচার করেছে, এখনো করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে বলছেন— ২১ আগস্টের জন্য শেখ হাসিনা দায়ী। যেটি উনার মা (খালেদা জিয়া) বলেছেন সংসদে। কী পরিমাণে পৈশাচিকতা থাকলে এসব বলা যায়। গণহত্যা চালানোর পর তাদের কোনো অনুশোচনা হয়নি বরং তারা এখনো নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।

বিএনপি-জামায়াতে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানির জন্য কোনো মামলা হয়েছে এমন নজির নেই উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা মায়াকান্না করে বলছেন তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলা ২০১২ সাল থেকে শুরু করা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতার কারণে হয়েছে। বিএনপি জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে গ্রেনেড হামলাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, সংসদে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া বললেন, শেখ হাসিনাকে আবার কে মারতে যাবে? ভ্যানিটি ব্যাগে করে তিনি নিজে গ্রেনেড নিয়ে গেছেন। কী নিষ্ঠুর পৈশাচিক রসিকতা!
হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকা মানে নেপথ্যে পাকিস্তানের ক্ষমতায় থাকা। জিয়া নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেন অথচ সরকার গঠন করলেন রাজাকারদের দিয়ে। পাকিস্তানের পক্ষে যারা ছিল তাদের পুনর্বাসন করলেন, দালাল আইন বাতিল করে রাজাকারদের মুক্ত করে দিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে আনলেন। নিষিদ্ধ জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিলেন। এসবের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় তিনি পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের জন্ম যারা মেনে নিতে পারেনি তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে চায়নি, তারা বাংলাদেশকেই হত্যা করতে চেয়েছে।

এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তিনি সেটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যারা মুক্তিযুক্ত চায়নি, বাংলাদেশ চায়নি, বাংলাদেশ চায়নি তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *