জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে একমত রোহিঙ্গারাও

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

বিশেষ প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কয়েকটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। তারা বলছেন, শেখ হাসিনার প্রস্তাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মনের কথারই প্রতিফলন ঘটেছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবের বাস্তবায়ন করতে মিয়ানমারকে চাপে রাখতে বিশ্বনেতাদের ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গা সংকটকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি উল্লেখ করে এর স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৪তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের কার্যকর প্রত্যাবাসনে উদ্যোগ নিয়ে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে; মিয়ানমারকে বৈষম্যমূলক আইনের বিলোপ ঘটাতে হবে এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন অঞ্চল সরেজমিনে পরিদর্শনের অনুমতি দিতে হবে; রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক বেসামরিক পরিদর্শক মোতায়েন করতে হবে এবং রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ দূর করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য অপরাধের সুষ্ঠু বিচার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বাস করা রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্টরা স্বাগত জানিয়েছেন। জার্মানিতে বসবাসরত নেই সান লুইন দেশটির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেন, শেখ হাসিনার প্রস্তাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মনের কথারই প্রতিফলন ঘটেছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বিচার, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং পূর্ণ নাগরিকত্ব সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। শেখ হাসিনা এর সবকটিই তার প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে সর্বশেষ সংকট শুরুর পর থেকে শেখ হাসিনা এ নিয়ে তৃতীয়বার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রস্তাব দিলেন। এটিও মনে করিয়ে দেন নেই সান লুইন। তিনি বলেন, বিশ্বনেতারা সবসময়ই তার প্রস্তাব শোনেন, কিন্তু কখনোই মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে তাকে সাহায্য করেন না।
যুক্তরাজ্যের বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশনের সভাপতি তুন খিনও একই মত পোষণ করেন। তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করছে না। তিনি বলেন, প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা গত কয়েক বছরে মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু এখনো রাখাইনে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাস করছেন। তারা ‘গণহত্যার’ হুমকিতে রয়েছেন। মিয়ানমারকে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জন করতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *