বিশেষ প্রতিবেদক :
চলমান দূর্নীতি বিরোধী অভিযানে সিলগালা হচ্ছে একের পর এক ক্যাসিনো। এসব অবৈধ ক্যাসিনোতে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। টপ টু বটম ক্যাসিনোতে জড়িয়ে পড়েছে দলটির দুর্নীতিবাজ নেতারা। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দিতে চলমান দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে বেড়িয়ে আসছে অপকর্মকারী নেতাদের নাম। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে হাওয়া ভবন থেকে পাঁচটি ক্যাসিনো উপকরণ উদ্ধার হয়েছিল। বর্তমানে বিদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি দেশের গডফাদারদেরও রয়েছে ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা।
শুধু ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি নয়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টির সদস্য ও যুবদল নেতাদের টাকার বিনিময়ে যুবলীগে পদ দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি শীর্ষ নেতাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় বাদ দেয়া হয়েছে যোগ্য ও পরীক্ষিত কর্মীদের। আর টাকার বিনিময়ে যুবলীগে স্থান পাওয়া লোকজনই ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাণিজ্যে সম্পৃক্ত বলে দাবি করেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
রাজধানী ঢাকায় চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর গ্রেফতার হন কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক পরিচয়দানকারী জি কে শামীম। এর মধ্যে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ফ্রিডম পার্টি থেকে এবং জি কে শামীম যুবদল থেকেই যুবলীগে সম্পৃক্ত হন। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাইরের লোক পদ পেয়েছে। যাদের কেউ এর আগে যুবলীগ করেনি।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলাকারীদের সঙ্গে খালেদও ছিল। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে এসে আমাদের যুবলীগে আশ্রয় নিয়েছে। এরপর জি কে শামীম অন্য দলের লোক ছিল। এদেরকে প্রশ্রয় দেয়া ঠিক হয়নি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের বাড়ি চট্টগ্রামে হওয়ায় তার প্রতি স্থানীয়দের প্রত্যাশা ছিল বেশি। কিন্তু সেই প্রত্যাশা টাকার কাছে হেরে যায় বলে অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ রানা বলেন, ওমর ফারুক চৌধুরীর একজন ক্যাশিয়ার যিনি চট্টগ্রামে যুব রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি গুলশান-২ রোজ বি হোটেলে নিয়ে আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছিল। বিনিময়ে আমাকে পদ দেয়া হবে বলে জানায়। টাকা না দেয়ায় তিনি বলেন, এটাই হলো বর্তমান কালচার।
এদিকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কেলেঙ্কারিতে বার বার যুবলীগ নেতাদের নাম আসায় তৃণমূলের নেতারাও ক্ষুব্ধ। এ পরিস্থিতির জন্য যুবলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে দুষছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা যারা রয়েছেন তারা নিশ্চয় প্রশ্রয় দিয়েছেন। না হয় তারা এ অপকর্ম করতে পারত না। যারা নেতৃত্বে আছে তাদের দায় নিতে হবে।
গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রামের রাউজানের বাসিন্দা ওমর ফারুক চৌধুরী। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হলেও তার আগে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন যুব সংহতিতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।