“সংলাপ বিরোধীদের সঙ্গে হবে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুযোগ নেই ” – সংবাদ সম্মেলনে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

Uncategorized জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সংলাপ বিরোধীদের সঙ্গে হবে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুযোগ নেই।’

নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংলাপ করছি তাদের সাথে, যারা এই সরকারকে মানে না, যারা মনে করে যে এই সরকার দেশের গণতন্ত্রকে ধবংস করে দিয়েছে; তাদের সঙ্গে আমরা সংলাপ করছি।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ নাই, প্রশ্নই ওঠে না। দে মাস্ট লিভ, তাদেরকে চলে যেতে হবে। আমরা বারবার করে বলছি যে চলে গিয়ে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা দিতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাজ করবে।’

নির্বাচন নিয়ে সরকার আলোচনায় ডাকলে যাবেন কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কোনো আলোচনার সুযোগ নেই, কোনো আলোচনা হবে না।’ যুগপৎ আন্দোলন কবে নাগাদ শুরু হতে পারে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করছি। সময়টা এখনই বলা যাবে না। সেই সংলাপ যখনই শেষ হবে, তখন বলতে পারব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (উদার গণতান্ত্রিক দল), আমরা তো নির্বাচন করতেই চাই, কিন্তু সেই নির্বাচনটা তো হতে হবে নির্বাচনের মতো। ওটা তো তামাশা হওয়ার জন্য তো হবে না। যারা ভোটের আগের রাত্রে ভোট করে ফেলে, ভোট নিয়ে চলে গেল, ১৫৪ জনকে নির্বাচিত করে দিল, নির্বাচন হয়ে গেল, প্রার্থীরা কেউ ক্যাম্পেইনে নামতে পারবে না, তাদেরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হবে। দেশে একটা ভয়ভীতি ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হবে, এটা তো হতে পারে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওনারা (শেখ হাসিনা) তো চানই বিরোধী দল নির্বাচনে না আসুক। ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার অভ্যাস হয়ে গেছে তো ওনাদের। ওয়াকওভার। আমরা বলেছি যে এই ধরনের ইলেকশন জনগণ মানবে না।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একেবারে সবাইকে লোকমা তুলে খাওয়ায় দিতে হবে, জিতিয়ে দিতে হবে, তবেই আসো, এটা তো হতে পারে না। মিলিটারি ডিক্টেটররা এভাবেই করেছে। তারা তো জনগণের কাছে যেতেই ভয় পায়। জনগণের সামনে ভোট চাইতে গিয়েও ভয় পায়। এটাই তো বাস্তবতা।’

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দল তার মতামত বলবে, শেখ হাসিনাও তাঁর বক্তব্য বলবেন। এভাবেই তিনি টিকে আছেন জনগণকে প্রতারণা করে, মিথ্যা কথা বলে, ভয় দেখিয়ে—সবকিছু করে টিকে আছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনে আমাদের ভয় পাওয়ার প্রশ্ন নেই। বরং তাঁরা ভীত হয়ে আছেন। তাঁরা সন্ত্রস্ত আছেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে তাঁরা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না, এটাই হচ্ছে মূল কথাটা। যে কারণে তাঁরা আজকে বিভিন্ন কলাকৌশল করে, বিভিন্ন রকম প্রতারণা করে, জনগণকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করে দিয়েছেন ভোট দেওয়া থেকে। মানুষই তো ভোট দিতে যায় না এখন। ভোট কী? পিপলস উইল ভোট। ওরাই (জনগণ) তো যেতে পারে না ভোটকেন্দ্রে। সেই জিনিসটা বড় কথা।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এরা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই নির্বাচন একটা প্রহসন একটা খেলা। আপনারা দেখবেন, অধ্যাপক আলী রিয়াজের যে “হাইব্রিড ডেমোক্রেসি” বইটা আছে, সেটার মধ্যে পরিষ্কার বলা আছে, এই দেশগুলো কর্তৃত্ববাদী যেখানে শিকড় গেড়ে বসে, সেখানে নির্বাচনটা তাদের অন্যতম অস্ত্র।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এ জে মোহাম্মদ আলী ও আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *