রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়

Uncategorized জাতীয়


আজকের দেশ ডেস্ক ঃ মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে স্বীকৃত অপরাধীর গাড়িতে শতে কষ্টে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা উড়িয়েছিলো বিএনপি। স্বাধীনতা অর্জনের তিন দশক পর ২০০১ সালে ১০ অক্টোবর আমাদের জাতীয় পতাকাকে ঠিক এই ভাবে অবমাননা করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি সেই পাকিস্তানিদের দোসর রাজাকারদের পুনর্বাসন করা হয়েছিল সেদিন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রীসভায় চিহ্নিত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত করায় মহান সংসদ ও সংবিধানকে চরম অবমাননা করা হয়েছিল সেদিন। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, রাজকারদের গাড়িতে তুলে দেয়া হলো রক্তমূল্যে কেনা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

রাজাকার ও জঙ্গিদের সঙ্গী করেই ২০০১ সালে কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলো বিএনপি। শরিক দল হিসেবে তারা বেছে নিয়েছিলো ৭১ এর চিহ্নিত দেশবিরোধী শক্তি, রাজাকারদের দল জামায়াতকে।

১৯৭১ সালে জামায়াতের দেশবিরোধী অপকর্মগুলো ভুলে স্রেফ ক্ষমতার লোভে ঘৃণিত জামায়াতকে জোটসঙ্গী করতে দ্বিধা করেনি বিএনপি। অবশ্য বেঈমানি আর প্রতারণার ইতিহাস বিএনপির জন্য বেশ পুরনো। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সকল চিহ্নিত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বন্দী করে বিচারের আওতায় এনেছিলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই তাদের মুক্ত করেন। পাশাপাশি রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

জন্মের শুরু থেকেই দেশবিরোধী ও পাকিপ্রেমীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বিএনপি তাই জামায়াতকে সঙ্গী করেই দেশব্যাপী প্রচারণা চালাতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের জন্য বড় এক আঘাত। যে নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী আজীবন বাংলাদেশের বিরোধিতা করে এসেছে, পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এসেছে নির্দ্বিধায়, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রাঙানো তাদের সেই হাতেই তুলে দেয়া হলো স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব।

শপথ গ্রহণের দিন রাজাকারদের সেই পৈশাচিক হাসি যেন মর্টার শেল হয়ে বিঁধেছিল দেশপ্রেমিক জনতার বুকে। লাখো মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যেরা সেদিন নীরবে অশ্রু ফেলেছেন।

৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া দেশে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে যুদ্ধাপরাধীরা, এর চেয়ে গ্লানি-দুঃখের আর কী বা হতে পারে!

যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী গং অবশ্য তাদের মিশন বাস্তবায়ন করেছিলেন ঠিকঠাক। নির্বাচনের রাত থেকেই দেশব্যাপী তাণ্ডব শুরু করে জামায়াত-শিবির, যা দিন দিন বাড়তে থাকে।

বিএনপি জামায়াত জোটের সরাসরি মদদে দেশব্যাপী চলতে থাকে সন্ত্রাস ও ভয়াবহ জঙ্গিবাদ। মুড়ি মুড়কির মতো গ্রেনেড-বোমা ফুটতে থাকে। দেশব্যাপী শিবিরের উগ্র তাণ্ডবের চিত্র উঠে আসতে থাকে গণমাধ্যমে। ক্ষমতায় থাকার পুরো পাঁচ বছরেই চলতে থাকে এই আস্ফালন।

সে সকলই এখন অতীত। রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীরা আজ আইনের আওতায়, অনেকেরই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু ২০০১-০৬ শাসনামলে যে আঘাত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর করেছেন খালেদা-তারেক গং, তা অনাদিকাল পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হবে বাংলাদেশকে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *