নিজস্ব প্রতিবেদক : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফেরত আনার ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের রায় অসুবিধা। এখানে দণ্ড মওকুফে আমাদের কোন সুযোগ নেই। মৃত্যুদণ্ডই এখানে একমাত্র সাজা।
‘আজকের শিশু আনবে আলো, বিশ্বটাকে রাখবে ভালো’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে শিশু অধিকার সপ্তাহ ও শিশু অধিকার সনদের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শিশু সংলাপ ২০১৯ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোববার এ কথা বলেন।
![](https://ajkerdesh.com/wp-content/uploads/2024/05/WhatsApp-Image-2024-05-31-at-21.07.07_c7f123fd.jpg)
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নূর চৌধুরী আত্মস্বীকৃত খুনি। এ আসামি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন-নেছা মুজিব, শিশু রাসেলসহ ১৮ জনকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে জড়িত। আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এখানে তার একমাত্র শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। এ আসামি যড়যন্ত্র ও হত্যায় জড়িত। আমরা তাদের বলেছি। এখানে দণ্ড মওকুফে আমাদের কোন সুযোগ নেই। মৃত্যুদণ্ডই এখানে একমাত্র সাজা।’
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, অপরাধীকে সাজা দেয়া হচ্ছে আইনের কাজ। এটা সমাজেরও চাহিদা। যদি কোনো অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কাউকে দেয়া হয় এবং সে আসামি বিদেশে পলায়ন করলে অনেক ক্ষেত্রে তাকে দেশে ফিরে আনা যায় না। সে জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও আসামি মনে করবে অপরাধ করলে আমাকে যাবজ্জীবন জেলে থাকতে হবে এটাও বড় শাস্তি।
মন্ত্রী বলেন, আবরার হত্যা হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমাদের সমাজে এটা হওয়া উচিত নয় এবং এটা যাতে আর না হয় সেরকম বিচারিক ব্যবস্থা সরকার নিবে। তিনি বলেন, আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সহযোগিতা চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে নিশ্চয়ই সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। সে যদি মনে করে যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা দরকার নিশ্চয়ই সরকার সেটা ভেবে দেখবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বহুদিন আগে বুয়েটে একজন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছিল তার বিচার কিন্তু আজ পর্যন্ত হয়নি। সেটার দাবীও আপনারা তোলেন। সরকার সে বিচারও করবে।
সমতা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশে শিশুদের গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে আনিসুল হক বলেন, এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে শিশুরাই উন্নয়নের চাবিকাঠি, শিশুরাই জাতি গঠনের মূল ভিত্তি। শিশুদের জীবনে ভালো একটি শুরু তাদের পরিণত বয়সে সমৃদ্ধি বয়ে আনে যার প্রভাব পড়ে পুরো জাতির উপর। অর্থাৎ শিশুদেরকে সমতা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ওপর নির্ভর করছে আমাদের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সাড়ে তিন বছরের সরকারে শিশুদের অধিকার, কল্যাণ, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৮৯ সালে ‘শিশু অধিকার সনদ’ গ্রহণ করে। এর অনেক আগেই জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। জাতির পিতা প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ এবং অবৈতনিক ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধে যে সব নারী ক্ষতিগ্রস্ত হন তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য জাতির পিতা বৃত্তি প্রথা চালু করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার দেওয়া মহান সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে শিশুদের জন্য রাষ্ট্রকে বিশেষ বিধান প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। সংবিধান, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এবং শিশু আইন অনুযায়ী শিশুদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিশুদের কল্যাণে যে ধরনের পদক্ষেপ, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন তা সরকার ইতোপূর্বে যেমন নিয়েছে, আগামীতেও নিতে থাকবে।
চাইল্ড পার্লামেন্টের স্পিকার মারিয়াম আক্তার জিম’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।