কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : বাংলা পয়লা কার্তিক বুধবার (১৬ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আঁখড়াবাড়ীতে তিন দিনব্যাপি লালন মেলা। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৯ তম দিবস উপলক্ষে লালন একাডেমী চত্বরে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
লালন শাহের কথা বাড়ির কাছে আরশিনগর, সেথা এক পরশি বসত করে- এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এবারের মেলার আয়োজন করেছে লালন একাডেমী।
ফকির লালন সাঁইয়ের ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন আঁখড়াবাড়িতে থাকছে লালন মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের সূচনায় আলোচনা সভা ছাড়াও প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত চলবে লালনের গানের আসর।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও লালন একাডেমীর আয়াজনে আগামী ১৬, ১৭ এবং ১৮ অক্টোবর বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ মেলা চলবে।
১৬ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে লালন মুক্তমঞ্চে উদ্বোধন করা হবে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় তিনদিন ব্যাপী এ উৎসবের।
প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ।
দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মস্তফা কামাল।
তৃতীয় দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া।
লালন একাডেমীর সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক (খাদেম) মোহাম্মদ আলী জানান, সাঁইজির ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তার সাধন-ভজনের তীর্থস্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণে সব আয়োজন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশ-বিদেশ থেকে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনসহ অসংখ্য মানুষের এখানে আগমন ঘটে। এখানে আসতে সাধুদের কোনো দাওয়াতের প্রয়োজন হয় না। তারা আপনা আপনি মনের টানে এখানে ছুটে আসে।
তিনি আরো জানান, তিনদিন ব্যাপি এ লালন উৎসব চলবে আগামী ১৮ অক্টোবর শুক্রবার পর্যন্ত।
এদিকে মেলাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সাধারণ দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় লালন মেলা প্রাঙ্গণ কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত জানান, এবারের লালন মেলাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিব্যারের ন্যায় এবারো বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ থাকবে। পুরো মেলা পুলিশের সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। সেই সাথে বিশেষ করে মেলায় প্রবেশ পথ গুলোতে পুলিশের ৬টি চেকপোস্ট থাকবে।
এবারে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লালন মেলায় বিশেষ মাদক বিরোধী প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলাকে কেন্দ্র করে ১০ অক্টোবর থেকেই মাজার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি মো. আসলাম হোসেন জানান, ইতোমধ্যেই লালন মেলার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।পুরো মেলা চত্বর সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।
তিনি আরো জানান, পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেলা চলাকালে ২৪ ঘণ্টা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন।