নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্যাসিনোকান্ডের ঘটনায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর তার কর্মী-সমর্থকরা অনেকটা চুপচাপ ছিলেন। তবে ধীরে ধীরে নেতার মুক্তি চেয়ে সক্রিয় হচ্ছেন বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের ভক্তরা।
ইতিমধ্যে সম্রাটের মুক্তি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। অন্যদিকে মঙ্গলবার ঢাকার নিম্ন আদালত এলাকায় ছেয়ে যায় সম্রাটের মুক্তির পোস্টারে।
শুধু পুরান ঢাকার আদালতপাড়াই নয়, তাঁতীবাজার, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, ইস্কাটনসহ ঢাকা দক্ষিণের বেশিরভাগ জায়গার দেয়ালে দেয়ালে দেখা গেছে সম্রাটের পোস্টার।
ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট মুক্তি পরিষদের পক্ষ থেকে লাগানো পোস্টারের ওপরের দিকে একপাশে দেয়া আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। সঙ্গে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছবি। অন্যপাশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মোনাজাত করছেন এমন ছবি।
সম্প্রতি রাজধানীতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন সম্রাটের ঘনিষ্ঠ যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর দায়ে আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাটের নাম ঘুরে ফিরে আসছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর গভীর রাতে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানায় র্যাব।
ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদন্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিনই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের কারাগারে।
পরে সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করে র্যাব। তাকে দুই মামলায় ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করে রমনা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় সম্রাটকে হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সুস্থ হলে তাকে ফের কারাগারে নেওয়া হয়।
পোস্টারের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে লেখা- সম্রাট খুব অসুস্থ। মানবতার জননী তাকে বাঁচান। এরপর লেখা রয়েছে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার তৃণমূলের পরীক্ষিত কর্মী, ঢাকার রাজপথের সাহসী বীর ইসমাইল হোসেন সম্রাটের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর তার কাকরাইল কার্যালয়ে অভিযানের সময় হাতকড়া পড়ানো ছবি দিয়ে পোস্টারে লেখা রয়েছে, সম্রাটের হাতে হাতকড়া রাজনীতিবিদরা চরম লজ্জিত।