নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৭ অক্টোবর বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় আবরারের বাবা রাজধানীর চকবাজার থানায় শাখার ছাত্রলীগের ১৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে আরও অনেকের কথা উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে রয়েছেন।

আববার হত্যার সেইসব অভিযুক্তদের নাম এবার গুগল ম্যাপে টয়লেটের লোকেশনে দেখা যাচ্ছে। আবরার বুয়েটের যে হলে থাকতেন (শেরেবাংলা হলে) সে হলের নাম পরিবর্তন হয়ে গুগল ম্যাপে দেখাচ্ছে শহীদ আবরার হল।
এছাড়া আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে হলের টয়লেটগুলো।
তবে বাস্তবে এ ধরণের কোন নামকরণ করেনি বুয়েট কর্তৃপক্ষ। গুগল ম্যাপে শেরেবাংলা হলের নাম দেখানো হচ্ছে শহীদ আবরার হল। আর টয়লেটগুলো হত্যায় জড়িতদের।
শহীদ আবরার হলের নাম লিখে গুগল ম্যাপে সার্চ করা হলে সরাসরি শেরেবাংলা চলে যাচ্ছে। এছাড়া ম্যাপে টয়লেটগুলোর নামও হত্যাকারীদের নামে দেখানো হচ্ছে। গুগল স্যাটেলাইট ভিউতেও একই ধরণের নাম দেখা যাচ্ছে।
হলের ভেতরে যে টয়লেটগুলোর নাম গুগল ম্যাপেরে লোকেশনে আসছে, অমিত শাহ পাবলিক টয়লেট, রাসেল পাবলিক টয়লেট, রবিন পাবলিক টয়লেট, অনিক সরকার পাবলিক টয়লেট, কিলার ফুয়াদ পাবলিক টয়লেট ইত্যাদি । অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য স্থাপনাগুলোয় পরিবর্তন দেখা যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, আবরার হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে কেউ গুগল ম্যাপে এ পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। তবে কারা এটি করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার। যেখানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পানি ও গ্যাস চুক্তির বিষয়ে একরকম ভিন্নমত পোষণ করেন আবরার। সেই স্ট্যাটাস ছাত্রলীগ নেতাদের নজরে আসে। তারপর আবরারকে ডেকে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
৬ আক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবরারকে ডেকে ২০১১ নং কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর আবরারের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করে মুন্না। এ সময় আবরার শিবিরের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ আনা হয়। আবরার এসব অস্বীকার করলে শুরু হয় স্ট্যাম্প দিয়ে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন।
বেধরক পেটানো হয় তাকে। মার খেয়ে একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ২০০৫ নং কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় অচেতন আবরারকে নিয়ে যান তারা।
অচেতন আবরারের চিকিৎসার জন্য হল প্রভোস্ট ও চিকিৎসককে খবর দেয় ছাত্রলীগের সেসব কর্মীরা। কিন্তু এরইমধ্যে প্রাণ হারান আবরার। চিকিৎসক এসে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়।