বিদেশি অর্থ ও কৃত্রিম আন্দোলনই তাদের পুঁজি – এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন

Uncategorized অন্যান্য


নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ বিদেশি অর্থ ও কৃত্রিম আন্দোলনই তাদের পুঁজি আর বাহারি খাবারের আয়োজন। ডেকচির পর ডেকচি বসিয়ে এ যেন উৎসব করার মহাপ্রস্তুতি! অর্থ প্রদান করার মধ্য দিয়ে লোক ভাড়া পাওয়া যায়।

রাজনৈতিক সভা করার নিমিত্তে যে দলের কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল থাকে, তাদের এমন উদ্যোগে যেতে হয়। বিএনপি আহুত ফরিদপুরের কথিত গণসমাবেশের চিত্র তুলে ধরে বলা যায়, তারা কার্যত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। ওইসব ১০ ডিসেম্বর বলে কিছু নেই। তারা চাইছে, দেশের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগ বাধা প্রদান করুক।

আর তারা একটা উপলক্ষ্য পুঁজি করে নতুন বছর থেকে নাশকতার রাজনীতি করে বলবে, আন্দোলন শুরু হল। এই তো! রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, এই পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের সমাদৃত রাজনৈতিক বিপ্লবের কয়েকটিও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সাধিত। অর্থাৎ তেমন বিপ্লব দেখে মনে করার সুযোগ সৃষ্টি হয় যে, কতই না জনশ্রেণির সম্পৃক্ততা রয়েছে! আসলে তেমন করে নয়। সেখানেও বার্গার, স্যান্ডুইচ আর পকেটে ডলার ঢুকিয়ে দিয়ে মাস্টারমাইন্ড তার স্বার্থ উদ্ধারে সচেষ্ট থাকে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলেখ্যের দিকে মন দিলেও আত্মা অখুশী হয়ে যায়, এমন অনেক নির্মম ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনী খন্দকার রশীদ কন্যা মেহনাজ রশীদ খন্দকার এক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছিল যে, আমার বাবা জাতীয় নির্বাচন এলেই বেগম খালেদা জিয়াকে কখনই ১০০ কোটি টাকার নিচে প্রদান করেন নাই। খুব স্পষ্টাকারে মেহনাজ বলেছে, ১৯৯১ সালের নির্বাচন থেকে এমন সংস্কৃতি শুরু হয়। তিনি বলেন, প্রয়াত হান্নান শাহ নাকি বাংলাদেশ থেকে এই অর্থ প্রাপ্তির ইস্যু নিয়ে বেগম জিয়া ও খুনী রশীদের মধ্যস্ততায় মাধ্যম হিসাবে কাজ করতেন।

অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীও পাকিস্তানভিত্তিক আদর্শকে মেনে চলে প্রথমদিকে তার নিজের দল এনডিপি ও পরের দিকে বিএনপির জন্য শত শত কোটি টাকার বন্দোবস্ত করতেন। এখন শোনা যায়, তার কনিষ্ঠ পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী উত্তরসূরী হয়ে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বাংলাদেশকে কামড় দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক দিক দেখেন, এমন এক দুইজন কথিত নারী নেত্রী রয়েছেন, যারা পাকিস্তান, তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি মৌলবাদী সংস্থার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে হালে প্রস্তুতি নিয়ে বলছেন, এবার সরকার ফেলে দেব।

একটা বিষয় বুঝতে হবে। বিএনপি এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের জন্য কি কি করতে চায়, তা কিন্তু স্পষ্ট করছে না। যেখানে সারাবিশ্বের বড় বড় দেশ অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের জন্য অন্তত আগামী ১০ বছরের জন্য তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বিধৃত হয়নি। অর্থাৎ তারা ডাকাতি করার মত দেশটাকে কব্জা করে অতঃপর লুট করে বুর্জোয়া শ্রেণির অংশ হতে চায়। যাদের কেহ, এমন করে বলতে পারেছে না, তারা মূলত বাংলাদেশের পক্ষে নয়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নয়, দেশ এগিয়ে যাওয়ার জন্যও খুব সম্ভবত তাদের হিংসে হয়।

বাংলাদেশে আমরা কৃত্রিম আন্দোলনকে তাই রুখে দেব। বিএনপির রাজনীতি অনেকটাই থিয়েটারের মত। আমরা দেখছি, বুঝতে পারছি। কিন্তু আমজনতা ধোঁকা খাচ্ছে। এই ধোঁকাটা খাওয়া যাবে না। জনগণের বোধকে জাগ্রত করার উদ্যোগ নিয়েই আওয়ামী লীগকে এখন তাই বিজয়ী হতে হবে।

কৃত্রিম আন্দোলনের হাতিয়ার হিসাবে বিএনপি ও তাদের নেপথ্য শক্তি ক্ষমতাধর সুশীল কমিউনিটি কৌশল হিসাবে দেশব্যাপি সমাবেশ করার আয়োজনে আছে। তারা টাকা দিয়ে লোক ক্রয় করে এমন আয়োজনে গিয়েছে। গণমাধ্যম আউটলেটের কাউকে কাউকে কাজে লাগিয়ে প্রচার করছে যে, চিড়া-মুড়ি-গুড় নিয়ে তাদের কর্মীরা সমাবেশে যোগ দিচ্ছে! যা প্রহসন ও প্রতারণামূলক তথ্য বলে মনে করার সুযোগ আছে। ঘর থেকে খাবার নিয়ে বের হলে ডেকচির পর ডেকচির চিত্র মিডিয়া তো অজ্ঞাতে দেখিয়েই ফেলল। আমিও দেখে ফেললাম!

বিএনপিকে আমলে নেওয়ার মত কিছুই ঘটেনি। তারা কি করতে পারে, কী চায়, সব কিছু সম্পর্কেই আমরা জ্ঞাত। বিশ্বাস করি, তাদের এই নকল কিংবা কৃত্রিম আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়বে। বরং, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উত্তরণে আমরা শেখ হাসিনার হাতকে মন থেকে শক্তিশালী করার উদ্যোগে এখন বিপ্লবী হব।

পুঁজি বলতে দ্রব্য ও অর্থের এমন সমষ্টিকে বোঝায়, যার সাহায্যে ভবিষ্যতে আয় উপার্জন করা সম্ভব। সাধারণত, ভোগদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় বা ব্যক্তিগত উপভোগের জন্য ব্যয় করা অর্থকে পুঁজি হিসেবে ধরা হয় না। কাজেই আজ আমরা যখন বাংলাদেশের পুঁজি নিয়ে ব্যস্ত, অন্যরা ভাত কে প্রাধান্য না দিয়ে ভোট নিয়ে পড়ে থেকে সস্তা জনপ্রিয়তা খুঁজতে থিয়েটার করছে। বিদেশি অর্থ আর নাশকতা করার সম্বল নিয়ে বলবে, আমরা জাতীয়তবাদী।

আমি বলছি, আওয়ামী লীগের ছায়ায় দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্বল আদর্শ বন্দী, কারণ, জনমানুষের জন্য স্বার্থ উদ্ধারে থেকে আওয়ামী লীগই শ্রেষ্ঠ জাতীয়তাবাদী দল। আমরাই শ্রেণি সংগ্রামের পথে থেকে মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে গিয়ে প্রিয় বাংলাদেশকে ভালবাসতে পেরেছি। মহান সৃষ্টিকর্তাকেও প্রতিনিয়ত স্মরণ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসাবেও বাংলাদেশ গর্ব করতে পেরেছে ও পারবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *