ঢাকী-মালেকের কমিশন বাণিজ্য!
নিজস্ব প্রতিবেদক : অপবিনিয়োগ সত্বেও কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে কালবের কুচিলাবাড়ী রিসোর্ট এন্ড ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নির্মানে পূর্বের বোর্ডের পদাংক অনুসরন করে বর্তমান বোর্ডও বিনিয়োগ করেছে। বিনিময়ে কমিশন পেয়েছেন চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী, সেক্রেটারী এমদাদ হোসেন মালেক ও একাউন্টস ম্যানেজার ফিরোজ আলম। ভিন্ন নামে তিন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মুলত: ঠিকাদার জাহাঙ্গির আলম। নিম্নমানের কাজ করে মালেক-ঢাকী-ফিরোজকে ম্যানেজ করে বিল তুলে নিচ্ছেন। ভবন বুঝে নেয়ার জন্যে গঠিত কমিটি অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিল পরিশোধ না করার পরামর্শ দিলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। এই প্রকল্পে ভুমি ক্রয় ও ভবন নির্মানে চরম দুর্নীতির অভিযোগ ছিল একদা মালেক গংদের। এখন তারাই কমিশন ভাগাভাগির জন্যে রিসোর্ট স্থাপনের জন্যে আরো ২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। কুচিলাবাড়ী ভবন নির্মানে আরো বিনিয়োগের বিষয়ে বোর্ড সভায় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও কয়েক জন বোর্ড সদস্য বিরোধিতা করল্ওে ঢাকী-মালেক তার তোয়াক্কা করেননি। বরং দায়িত্ব গ্রহনের পরই বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া ঢাকী-মালেক কুচিলাবাড়ীতে নতুন রিসোর্ট প্রকল্প শুরু করে।এবিষয়ে ইন্টারনাল অডিট কমিটির রিপোর্টেও আপত্তি করা হয়। এমনকি নতুন-পুরাতন কোন বিনিয়োগের বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত কোন অনুমোদন দেয়নি। নিশ্চিত লোকসানী প্রকল্প জানা সত্ত্বেও কেবল টাকা কামানোর জন্যে রিসোর্ট করা হয়েছে। কুচিলাবাড়ী রিসোর্ট নির্মানে প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুন ব্যয় ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ থাকা সত্ত্বে বর্তমান বোর্ড কর্তৃক ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে কাল্ব রিসোর্ট এ- ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নির্মাণের বিষয়ে পর্যালোচনায় দেখা যায়- এজিএম-এ অনুমোদিত বাজেট ১৪ কোটি টাকা। উক্ত কার্যক্রমের ডিটেইল ডিজাইন, প্ল্যান, ৩ডি ভিউ ও প্রতিটি খাতের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণে ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম তালিকাভূক্তির জন্য ১৩-০৮-২০১৮ তারিখে দৈনিক জণকণ্ঠ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। মোট ৬টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করে। ২টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভূক্তি করা হয়। ০৩-০৯-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করে নোটিশ প্রদান করা হয়। ০৪-০৯-১৮ থেকে ০৯-০৯-২০১৮ তারিখ পর্যন্ত দরপত্র জমা নেয়া হয়। ২টি দরপত্র জমা হয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসাবে এক্যুমিন আর্কিটেক্টস্ এ- প্ল্যানার্স লিঃ-কে ৩৫,৩৬,০০০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
অডিটরিয়াম ও মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ৩১-১০-২০১৮ তারিখে দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক অভজারভার পত্রিকায় ঠিকাদার তালিকাভূক্তির বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ৭টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভূক্তির আবেদন করে। ৪টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভূক্ত করা হয়।
২৮-১১-২০১৮ থেকে ০৪-১২-২০১৮ পর্যন্ত সময দিয়ে ২৭-১১-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসাবে মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ২৩-১২-২০১৮ তারিখে ‘ফাউন্টেক’-কে ৫,২৬,৭৮,১০০/- টাকা এবং অডিটরিয়াম ইন্টেরিওর কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে ‘রিট কনস্ট্রাকশন’-কে ৩,৯৪,৭২,২২০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
সিভিল (পুল,লেক,রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের জন্য পূর্বে তালিকাভূক্তি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে ২৮-১১-২০১৮ থেকে ০৪-১২-২০১৮ পর্যন্ত সময দিয়ে ২৭-১১-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে ১৯-১২-২০১৮ তারিখে মেসার্স জে এন ট্রেডার্স-কে ২,২৮,৪৭,১৪০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
উল্লিখিত দরপত্রগুলো খোলা কমিটির সদস্যগণ হলেন- মি. ফ্রান্সিস পি. রোজারিও-আহ্বায়ক, এ্যাড. উত্তম হালদার, সদস্য, মি. ফিরোজ আলম- সদস্য সচিব। ০৮-১২-২০১৮ তারিখ দরপত্র খোলা হয় এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মূল্যায়ন কমিটিতে প্রেরণের সুপারিশ করা হয়। মূল্যায়ন কমিটির সদস্যগণ হলেন- মি. হরিপদ চন্দ্র নাগ- আহ্বায়ক, মি. ফ্রান্সিস পি, রোজারিও, সদস্য, মো. সুলতান উদ্দিন, সদস্য, ইঞ্জি. আবু তাহের, সদস্য, মি. ফিরোজ আলম-সদস্য সচিব। কমিটি ১০-১২-২০১৮ তারিখ মূল্যায়ন করে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদানের সুপারিশ প্রদান করেন।
১৩তম বোর্ড সভায় বোর্ড সদস্য মি. অমূল্য চন্দ্র দাস উপ-কমিটির কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ‘ফাউন্টেক’-এর কাগজপত্র ভুয়া এবং প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনি চেয়ারম্যান হিসেবে ‘ফাউন্টেক’-এর কাগজপত্র যাচাই করার জন্য ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেত্বত্বে ডিরেক্টর আব্দুর রাজ্জাক ও ট্রেজারার এম. জয়নাল আবেদীনের সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি যাচাই কমিটি গঠন করেন। উল্লেখ্য যে, তিনজন ডিরেক্টর মি. আলফ্রেড রায়, মি. কুতুব উদ্দীন ও মিসেস্ শারমিন জাহান মঞ্জু উক্ত প্রকল্পে কাজের স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেন এবং তারা উক্ত নির্মাণ কাজের কোন দায়ভার নিবেন না বলে উক্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ করার প্রস্তাব করেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়- উক্ত যাচাই কমিটি প্রতিবেদন জমা হওয়ার পূর্বেই ‘ফাউন্টেক’ সহ সকল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। অডিটরিয়াম ইন্টেরিয়র কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে ‘রিট কনস্ট্রাকশন’-কে ৩,৯৪,৭২,২২০/- টাকা, সিভিল (পুল, লেক, রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে মেসার্স জে এন ট্রেডার্স-কে ২,২৮,৪৭,১৪০/- টাকা এবং মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ২৩-১২-২০১৮ তারিখে ‘ফাউন্টেক’-কে ৫,২৬,৭৮,১০০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, উল্লিখিত কার্যাদি সম্পাদন করার জন্য কোন ডিজাইন ও প্রাক্যলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা তাও আজ পর্যন্ত কোন বোর্ড সভায় জানানো বা উপস্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয় নিয়ে ০৪-০২-২০১৯ খ্রীঃ তারিখে ১৪তম বোর্ড সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় দেখা যায়- সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গঠিত যাচাই কমিটি অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য উক্ত প্রকল্পের সকল কাজের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পুনরায় যাচাই করার সুপারিশ করা সত্বেও যাচাই প্রতিবেদন জমা হওয়ার পূর্বেই সকল কাজের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে এবং উক্ত কাজের যথাযথ প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা নিয়ে আরো প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান। বিস্তারিত আলোচনায় উক্ত কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় কয়েকজন বোর্ড সদস্য উক্ত কাজ বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেন এবং উক্ত কাজের কোন প্রকার দায়-ভার বহন করবেন না এবং এ বিষয়ে লিখিত আবেদন জানানোর কথাও বলেন।
অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি ০৪-০৪-২০১৯ খ্রীঃ তারিখে জেনারেল ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) সহ কাজের অগ্রগতি জানার জন্য সরেজমিনে উক্ত প্রকল্প পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। দেখা যায়- ইন্টেরিয়র কাজের ৫৫%, সিভিল (পুল, লেক, রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের ২০% ও মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজের ৬০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
পরিদর্শনকালে যে সকল বিষয় পরিলক্ষিত হয়ছে তা হলো ঃ মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজের মধ্যে খাট, খাটের চালি, টেবিল, চেয়ার, কেবিনেট, টিভি ফ্রেম, মিরর ইত্যাদি কাজের ৫৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাঠের কাজের মধ্যে বিশেষ করে খাটে মেহগনি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু কাঁচা কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কাঠের গুনগত মান খুবই নিম্নমানের। কিছু ক্ষেত্রে কাঠের সাইজ খুবই পাতলা দেয়া হয়েছে। খাটের চালির গুনগত মানও নিম্নমানের। নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করায় টেকসই ও গুনগত মান কম হবে। প্রতিষ্ঠান যথেষ্ঠ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়।
কাল্ব রিসোর্ট এ- ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নির্মাণের বিষয়ে পর্যালোচনায় দেখা যায়- এজিএম-এ অনুমোদিত বাজেট ১৪ কোটি টাকা। উক্ত কার্যক্রমের ডিটেইল ডিজাইন, প্ল্যান, ৩ডি ভিউ ও প্রতিটি খাতের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণে ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম তালিকাভূক্তির জন্য ১৩-০৮-২০১৮ তারিখে দৈনিক জণকণ্ঠ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। মোট ৬টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করে। ২টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভূক্তি করা হয়। ০৩-০৯-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করে নোটিশ প্রদান করা হয়। ০৪-০৯-১৮ থেকে ০৯-০৯-২০১৮ তারিখ পর্যন্ত দরপত্র জমা নেয়া হয়। ২টি দরপত্র জমা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে এক্যুমিন আর্কিটেক্টস্ এ- প্ল্যানার্স লিঃ-কে ৩৫,৩৬,০০০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
অডিটরিয়াম ও মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ৩১-১০-২০১৮ তারিখে দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক অভজারভার পত্রিকায় ঠিকাদার তালিকাভূক্তির বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ৭টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভূক্তির আবেদন করে। ৪টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভূক্ত করা হয়।
২৮-১১-২০১৮ থেকে ০৪-১২-২০১৮ পর্যন্ত সময দিয়ে ২৭-১১-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসাবে মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ২৩-১২-২০১৮ তারিখে ‘ফাউন্টেক’-কে ৫,২৬,৭৮,১০০/- টাকা এবং অডিটরিয়াম ইন্টেরিওর কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে ‘রিট কনস্ট্রাকশন’-কে ৩,৯৪,৭২,২২০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
সিভিল (পুল,লেক,রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের জন্য পূর্বে তালিকাভূক্তি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে ২৮-১১-২০১৮ থেকে ০৪-১২-২০১৮ পর্যন্ত সময দিয়ে ২৭-১১-২০১৮ তারিখে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে ১৯-১২-২০১৮ তারিখে মেসার্স জে এন ট্রেডার্স-কে ২,২৮,৪৭,১৪০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
উল্লিখিত দরপত্রগুলো খোলা কমিটির সদস্যগণ হলেন- মি. ফ্রান্সিস পি. রোজারিও-আহ্বায়ক, এ্যাড. উত্তম হালদার, সদস্য, মি. ফিরোজ আলম- সদস্য সচিব। ০৮-১২-২০১৮ তারিখ দরপত্র খোলা হয় এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মূল্যায়ন কমিটিতে প্রেরণের সুপারিশ করা হয়। মূল্যায়ন কমিটির সদস্যগণ হলেন- মি. হরিপদ চন্দ্র নাগ- আহ্বায়ক, মি. ফ্রান্সিস পি, রোজারিও, সদস্য, মো. সুলতান উদ্দিন, সদস্য, ইঞ্জি. আবু তাহের, সদস্য, মি. ফিরোজ আলম-সদস্য সচিব। কমিটি ১০-১২-২০১৮ তারিখ মূল্যায়ন করে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদানের সুপারিশ প্রদান করেন।
১৩তম বোর্ড সভায় বোর্ড সদস্য মি. অমূল্য চন্দ্র দাস উপ-কমিটির কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ‘ফাউন্টেক’-এর কাগজপত্র ভুয়া এবং প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনি চেয়ারম্যান হিসেবে ‘ফাউন্টেক’-এর কাগজপত্র যাচাই করার জন্য ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেত্বত্বে ডিরেক্টর আব্দুর রাজ্জাক ও ট্রেজারার এম. জয়নাল আবেদীনের সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি যাচাই কমিটি গঠন করেন। উল্লেখ্য যে, তিনজন ডিরেক্টর মি. আলফ্রেড রায়, মি. কুতুব উদ্দীন ও মিসেস্ শারমিন জাহান মঞ্জু উক্ত প্রকল্পে কাজের স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেন এবং তারা উক্ত নির্মাণ কাজের কোন দায়ভার নিবেন না বলে উক্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ করার প্রস্তাব করেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়- উক্ত যাচাই কমিটি প্রতিবেদন জমা হওয়ার পূর্বেই ‘ফাউন্টেক’ সহ সকল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। অডিটরিয়াম ইন্টেরিয়র কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে ‘রিট কনস্ট্রাকশন’-কে ৩,৯৪,৭২,২২০/- টাকা, সিভিল (পুল, লেক, রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের জন্য ১৯-১২-২০১৮ তারিখে মেসার্স জে এন ট্রেডার্স-কে ২,২৮,৪৭,১৪০/- টাকা এবং মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজ সম্পাদনের জন্য ২৩-১২-২০১৮ তারিখে ‘ফাউন্টেক’-কে ৫,২৬,৭৮,১০০/- টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, উল্লিখিত কার্যাদি সম্পাদন করার জন্য কোন ডিজাইন ও প্রাক্যলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা তাও আজ পর্যন্ত কোন বোর্ড সভায় জানানো বা উপস্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয় নিয়ে ০৪-০২-২০১৯ খ্রীঃ তারিখে ১৪তম বোর্ড সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় দেখা যায়- সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গঠিত যাচাই কমিটি অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য উক্ত প্রকল্পের সকল কাজের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পুনরায় যাচাই করার সুপারিশ করা সত্বেও যাচাই প্রতিবেদন জমা হওয়ার পূর্বেই সকল কাজের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে এবং উক্ত কাজের যথাযথ প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা নিয়ে আরো প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান। বিস্তারিত আলোচনায় উক্ত কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় কয়েকজন বোর্ড সদস্য উক্ত কাজ বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেন এবং উক্ত কাজের কোন প্রকার দায়-ভার বহন করবেন না এবং এ বিষয়ে লিখিত আবেদন জানানোর কথাও বলেন।
অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি ০৪-০৪-২০১৯ খ্রীঃ তারিখে জেনারেল ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) সহ কাজের অগ্রগতি জানার জন্য সরেজমিনে উক্ত প্রকল্প পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। দেখা যায়- ইন্টেরিয়র কাজের ৫৫%, সিভিল (পুল, লেক, রাস্তা ও অন্যান্য) কাজের ২০% ও মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজের ৬০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল ভবনের ইন্টেরিয়র কাজের মধ্যে খাট, খাটের চালি, টেবিল, চেয়ার, কেবিনেট, টিভি ফ্রেম, মিরর ইত্যাদি কাজের ৫৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাঠের কাজের মধ্যে বিশেষ করে খাটে মেহগনি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু কাঁচা কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কাঠের গুনগত মান খুবই নিম্নমানের। কিছু ক্ষেত্রে কাঠের সাইজ খুবই পাতলা দেয়া হয়েছে। খাটের চালির গুনগত মানও নিম্নমানের। নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করায় টেকসই ও গুনগত মান কম হবে। প্রতিষ্ঠান যথেষ্ঠ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ বিষয়ে অডিট রিপোর্টে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়।
এবিষয়ে কালবের অভিজ্ঞ ডেলিগেটগণ মনে করেন, পাশেই ঢাকা ক্রেডিটের রিসোর্ট লোকসান দিচ্ছে। সেখানে কালবের রিসোর্টের কোন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নেই। এরিয়ান কেমিকেলের বিনিয়োগের মত এটাও নি:সন্দেহে অপবিনিয়োগ। বোর্ড সদস্যদের ব্যক্তি স¦ার্থসিদ্ধি ছাড়া কালবের কোন লাভ দেখছেন না তারা। এখানের বিনিয়োগ থেকে রিটার্ন আসার কোন সম্ভাবনা নেই। ভবন সহ ভুমি বিক্রি করে বিনিয়োগের অর্ধেক টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও তারা সন্দিহান।