স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগ চেয়েছেন শোয়েব আখতার। পাকিস্তানের সাবেক এই তারকা পেসার নিজের অফিসিয়াল ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করে এসব বলেন তিনি।
টাইগার ক্রিকেটারদের পক্ষে শোয়েব বলেন, খেলোয়াড়রা যখন বোর্ডের ওপর নাখোশ হয় তখন ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়রাও শর্ত রেখেছে তাদের বোর্ডের কাছে। আমি আমার সোর্সের কাছে ফোন করেছিলাম, তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি কেন তারা আন্দোলন করছ। একটা কথা মনে রাখবেন, আমি সব সময় খেলোয়াড়দের পক্ষে। সেটা হোক বাংলাদেশ, পাকিস্তান অথবা ভারত। খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত কখনওই ভুল হতে পারে না। যখনই তাদেরকে দাবানোর চেষ্টা করা হয় তখনই জটিলতা সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানের হয়ে ৪৬ টেস্ট, ১৬৩ ওয়ানডে ও ১৫টি টো-টোয়েন্টিতে ৪৪৪ উইকেট তুলেছেন শোয়েব। পাকিস্তানসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘরোয়া ও ফ্রাঞ্চাইজি লিগে অংশ নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে ক্রিকেট লিগ শুরুর পর বেশ ভালই টাকা পাচ্ছিল খেলোয়াড়রা। সেখানের অর্থনৈতিক অবস্থাও দিনের পর দিন ভালো হচ্ছে। খেলা দেখতে মাঠে দর্শকও অনেকে থাকে। আমার অনেক ভক্ত রয়েছে। ভালোবাসে তারা আমাকে। অনেক সময় আমার কাছে আবদার করে, কেন বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলি না। এখন আমি বলছি বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে আমার ভাবনা কি।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের উদ্দেশ্যে রাওয়াল পিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত এই পেসার বলেন, এই ব্যক্তি বোর্ডকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো উপযুক্ত না। ঢাকা লিগের বেতন নির্ধারণ, বিপিএলের টাকাও নির্ধারণ। এমন কিছু নিয়ম বানানো হয়েছে যেখানে খেলোয়াড়রা দুষ্টুমি না করতে পারে। অনেকের এমন একটা মানসিকতাই থাকে। এমনটা আমার সঙ্গেও হয়েছে। যদিও ভারতে এমনটা হয় না। তবে সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে এমন হয়েছিল।
শোয়েবের ভাবনায় বোর্ড কর্তাদের কেউ মনে রাখলেও ক্রিকেটাররা সারা জীবন রয়ে যান ভক্তদের ভালোবাসায়।
একজন ব্যক্তি বোর্ড প্রেসিডেন্ট অথবা চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন মাত্র দুই বছরের জন্য। এরপর নিজের ইচ্ছা মতো ক্রিকেটারদের নিয়ন্ত্রণ করতে চান। ওই ব্যক্তিকে কে মনে রাখে? আমার সঙ্গেও এমন হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত কারণে নাসিম আশরাফ (সাবেক প্রধান পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড -পিসিবি) আমাকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। ধন্যবাদ জারদারি সাহেবকে (আসিফ আলি জারদারি পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি)। তিনিসহ অন্যরা নাসিম আশরাফকে বলেছিলেন, তোমাকে কে চেনে? দুই দিনের জন্য এসে বদমাশি করছো। তুমি এসেছো দুই দিনের জন্য শোয়েব আখতার থাকবে শতবছরের জন্য। তাকে পুরো দুনিয়া মনে রাখবে। ঠিক এমনই অবস্থা বাংলাদেশ বোর্ড প্রধানের। দুই দিনের জন্য এসেছেন, অন্যদিকে গেল ১০ বছর ধরে মাশরাফি খেলেছেন ভাঙ্গা দুই পা দিয়ে। দলটাকে গুছিয়েছেন তিনি। তেমনটাই সাকিব, লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহরা খেলেছেন। তারাই বাংলাদেশ দলটার জন্য অনেক কিছু করেছেন। অন্যদিকে আপনি লাঠি দিয়ে পশু পালনের মতো তাদের নিয়ন্ত্রণ করছেন।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য বাক-স্বাধীনতা প্রয়োজন। খেলোয়াড়দের অধিকার রক্ষা করতে পারলেই ক্রিকেটের আরও উন্নতি হবে।’ বলে যোগ করেন শোয়েব।’