সাকিবকে আইনি নোটিশ পাঠাচ্ছে বিসিবি!

এইমাত্র ক্রিকেট খেলাধুলা

বিশেষ প্রতিবেদক : এ যেন শেষ হইয়াও হইলো না শেষ! শুরুতে ১১ দফা, পরে ১৩ দফা দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট; বিসিবি দাবি মেনে নেওয়ায় মাঠে ফিরলেন তারা। দুই দিনের বিরতিতে ফের আলোচনায় ক্রিকেট, সুনির্দিষ্টভাবে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব আল হাসান। খবর— টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের এই অধিনায়ককে আইনি নোটিশ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শীর্ষস্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কারণ একটি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়ে বিসিবি’র এনওসি বা অনাপত্তিপত্র নেননি তিনি।
ক্রিকেটে গেল কিছুদিন ধরে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই সাকিব আল হাসান গ্রামীণফোনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন এবং তা প্রকাশিতও হয়েছে ফলাও করেই। তবে বাধ সেধেছে এখানেই। গ্রামীণফোন-রবি-এয়ারটেল-বাংলালিংক এমন টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সাথে ক্রিকেটারদের চুক্তি করার ক্ষেত্রে বিসিবি থেকে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া রয়েছে। টেলিকম কোম্পানি রবি বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্পন্সর ছিল, আর তখনই কিছু ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টে’র কারণে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সাব্বির রহমানের ‘কুখ্যাত’ এক বিজ্ঞাপনের পর বিসিবি এমন নিয়ম করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, বিসিবি’র কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত কোনো ক্রিকেটার যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তি করতে চাইলে বোর্ডের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এনওসি বা অনাপত্তিপত্র নিতে হবে। অথচ গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তির আগে সাকিব সেটি নেননি। এমনকি বোর্ডকে এ সম্পর্ক কোনো তথ্যও অবহিত করেননি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঠিক যে সময়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে আন্দোলনরত, ঠিক সে সময়ে সাকিব আল হাসান গ্রামীণফোনের সাথে এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন। আর এতে বিসিবির নির্দেশনা অমান্যই করেছেন সাকিব।
এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি জাতীয় ওই দৈনিককে বলেছেন, এই চুক্তি কোনোভাবেই করতে পারে না। কেন পারে না, চুক্তিতে সব লেখা আছে। লিখিতভাবে ওদের বলে দেওয়া আছে। রবি আমাদের টাইটেল স্পন্সর হলো। গ্রামীণ বিডই করল না। না করে এক-দুই কোটি দিয়ে খেলোয়াড়দের নিয়ে ফেলল। এতে শেষ পর্যন্ত কী হলো? তিন বছরে বোর্ডের ৯০ কোটি টাকা লস হলো। খেলোয়াড় লাভবান হলো। কিন্তু বোর্ডের তো ১২টা বেজে গেল। এটি তো হতে পারে না। তাই লিখিতভাবে ওদের জানিয়ে রাখা আছে। এমনকি আমার জানামতে মন্ত্রণালয় থেকেও ওদের বলা আছে যে না জানিয়ে টেলকোর সঙ্গে চুক্তি করা যাবে না। আমাদের সঙ্গে চুক্তি তো আছেই। তারপরও আমাদের না জানিয়ে কী করে চুক্তি করে? টাইমিংটা দেখুন। খেলা বন্ধ করে চুক্তি! এগুলো তো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ।
সাকিবের এমন আচারণে বেশ ক্ষুদ্ধ বিসিবি। আর এতেই তার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, আমরা লিগ্যাল অ্যাকশনে যাচ্ছি। কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করব এখন। সেটি কোম্পানির কাছেও দাবি করব আর খেলোয়াড়ের কাছেও। আমরা কি ছেড়ে দেবো নাকি? কাল (গত বৃহস্পতিবার) শুনলাম প্রথম। আমি বলে দিয়েছি, গ্রামীণফোনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাও। বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাও। বলেছি, চিঠি পাঠাও সাকিবকেও। আমাদের ব্যাখ্যা চাই। সে আইন ভঙ্গ করে গেল কেন? এখন সে যদি দেখাতে পারে যে আইন ভঙ্গ করেনি, ওকে তো বলার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের কাছে ব্যাপারটিকে মনে হয়েছে, বোর্ডের কোনো নিয়ম-কানুন মানি না। এ রকম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবই।
গ্রামীণফোনের সঙ্গে সাকিব চুক্তিবদ্ধ হওয়া বিষয়ে বিসিবি’র সিইও নিজামউদ্দিন বলেছেন, আসলে আমরা খেলোয়াড়দের জানিয়ে দিয়েছি, এমন কারও সঙ্গে যেন চুক্তিবদ্ধ না হয় যাতে কেন্দ্রীয় স্পন্সরের সঙ্গে কোনো জটিলতা তৈরি হয়। এখন আমাদের সঙ্গে ইউনিলিভারের চুক্তি রয়েছে, এই চুক্তি খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। আর এখনই যদি কোনো ক্রিকেটার কোনো টেলকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে, তাহলে আর কোনো কোম্পানি আমাদের স্পন্সর করতে রাজি হবে না।
তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সাকিব আল হাসান কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি। এবং শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রস্তুতির অংশ অনুশীলন ক্যাম্পেও যোগ দেননি সাকিব আল হাসান। এ সম্পর্কে বিসিবিকেও তিনি কিছু অবহিত করেননি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *