জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকার ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

Uncategorized অন্যান্য


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিশ্বব্যপী ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরিষার আবাদ বেড়েছে। এ কারণে এখন বিদেশ থেকে যে পরিমান ভোজ্য আমদানি করা হয় তার চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কম আমাদানি করা লাগবে বলে মনে করছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

মঙ্গলবার ৩ জানুয়ারী, রাজধানীর শাহবাগে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ কক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে খাদ্যমন্ত্রী একথা জানান।

‘জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকার ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার।

মানুষের মাঝে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ‘নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা’ নামে একটি পুস্তিকা তৈরি করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ।
খাদ্য ক্রয়, প্রস্তুত, রান্না, পরিবেশন ও সংরক্ষণের প্রতিটি ধাপে খাদ্য কিভাবে নিরাপদ রাখা যায় সে বিষয়ে পারিবারিক পর্যায়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে এতে।
এই পুস্তিকার পিডিএফ সংস্করণ কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এই উদ্যোগ শিশুর সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে এবং সুস্থ-সবল পরিবারের প্রয়োজনীয় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে নির্দেশিকা প্রচারের বিষয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ভালো জিনিস যখন প্রচার করা হয় তখন গতিটা ধীর হয়, আর খারাপ জিনিস যখন প্রচার করা হয় তখন সেকেন্ডের মধ্যে সব জায়গা পৌঁছে যায়। এটা হলো আমাদের অবস্থান। এই অবস্থান থেকে আমাদের উতরাতে হবে। আমাদের মানসিক বিকৃতির যে অবস্থানটা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দিন আইন দিয়ে বা শাসন করে সমাজের খুব ভালো উন্নয়ন করা যায় বলে আমি মনে করি না। আইন তো একটা থাকবেই। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন করার জন্য বিধিবিধানগুলো সবাইকে আত্মস্থ করতে হবে। আমাদের যে কোনো একটা ভালো কাজের রেভুলেশন (বিপ্লব) শুরু করতে হবে। আর এজন্য প্রথমে বীজ বপন করতে হবে এবং সেটাকে নিয়ে যেতে যেতে একটা জায়গায় পৌঁছাতে হবে।

খাদ্য মন্ত্রী বলেন, যত টেস্টি খাবার ততই কিন্তু অনিরাপদ, এটাও কিন্তু মনে রাখতে হবে। আমরা টেস্টি খাবার বেশি পছন্দ করি। অতএব টেস্টটি খাবার যখনই হবে তখনই কিন্তু আমরা সঠিক জায়গা যেতে পারবো না। পরিমিত খাবার খেয়ে কিন্তু আপনারা সারা দিন কাটাতে পারেন,শরীর ঠিক রাখতে পারেন। আপনার পরিবারের সব সদস্যকে সুখে রাখার তাগিদে আপনাকে পরিমিত এবং নিরাপদ খাদ্য খেতে হবে।

এবার ৩০ শতাংশ ভোজ্যতেলের আমদানি কম করা লাগবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যখন আমাদের দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে গেল, পৃথিবীতে বেড়েছে এবং এখনো বাড়তেই আছে। এটার পরে আপনি একটু রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর যান, যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই হলুদ আর হলুদ। মানুষ সরিষার আবাদ করেছে। মানুষ পারে না কী? আমার তো মনে হয় ৩০ শতাংশ ভোজ্য তেলের আমদানি এবার সরিষার কারণে কম হবে। অতএব মানুষ ইচ্ছা করলেই পারে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশনগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, আমরা সবাই যদি দায়িত্বশীল হই, তাহলে আমরা অবশ্যই নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য যেমন পাবো তেমনি আমরা পরিণত খাদ্য খেয়ে নিজের জীবন ও শরীরকে ঠিক রাখতে পারব।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পৃথিবীতে আলোচিত যে বিষয় সেটা হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা।

খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত খাদ্য নিরাপদতা। আমার হাজার গাড়ি বাড়ি যাই থাকুক না কেনো, সুন্দর বাসাই থাকি, কিন্তু আমার যদি খাবার না থাকে তাহলে কিন্তু আমার সব সুখ অসুখ হয়ে যাবে। দ্বিতীয় হলো আমার প্রচুর খাবার আছে। কিন্তু সেই খাবার নিরাপদ না হলে ভোজনবিলাস মিটবে, কিন্তু খাদ্যের যে মৌলিক উৎস সেটা করতে পারবে না।

ইসমাইল হোসেন বলেন, এখন খাদ্য নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। কারণ সারা পৃথিবীতে যখন খাদ্য সংকটের কথা বলা হচ্ছিল তখন আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি পৃথিবীর কোথাও থেকে আপনাকে খাদ্য দেবে না। আর আপনার নিরাপদ খাদ্য আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (খাদ্য ভোগ ও ভোক্তা অধিকার) মো. রেজাউল করিম। এছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয় ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *