বিনোদন প্রতিবেদক ঃ কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৮১তম জন্মদিন সোমবার ২৩ জানুয়ারি, ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দিনটিকে ঘিরে চ্যানেল আই তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সব আয়োজনই প্রচার হচ্ছে চ্যানেলটির পর্দায়। এর মধ্যে রয়েছে নায়করাজ রাজ্জাক অভিনীত সিনেমা, বিশিষ্টজনদের স্মৃতিচারণ, বিশেষ তারকাকথন এবং তার অভিনীত সিনেমার গান।
রোববার ২২ জানুয়ারি প্রচার হয়েছে রাজ্জাক অভিনীত সিনেমা ‘বড় ভালো লোক ছিল’।
একই দিন দুপুরে ‘এবং সিনেমার গান’ অনুষ্ঠানে তার অভিনীত সিনেমার গান দেখানো হবে। সকালে ‘গান দিয়ে শুরু’তে থাকবে রাজ্জাক স্মরণে বিশেষ পরিবেশনা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) প্রচার হবে তার অভিনীত সিনেমা ‘অভিযান’। এদিন বেলা ১২টা ৫ মিনিটে থাকবে রাজ্জাককে নিয়ে ববিতার স্মৃতিকথা ‘অন্তরঙ্গ ববিতা’। ১২টা ৩০ মিনিটে ‘তারকাকথন’-এ নায়করাজ রাজ্জাকের স্মৃতিচারণ করবেন সৈয়দ হাসান ইমাম ও রাজ্জাক তনয় সম্রাট।
এর আগে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে প্রচারিতব্য ‘গান দিয়ে শুরু’র বিশেষ পর্বে অংশ নেবেন শিল্পী মো. খুরশীদ আলম ও অন্যরা। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) প্রচার হবে নায়করাজ পরিচালিত সিনেমা ‘আয়না কাহিনী’।
উল্লেখ্য, রাজ্জাক নায়করাজ নামে পরিচিত হলেও তার পরিবারিক নাম আবদুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) চলে আসেন তিনি। চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।
নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি।
‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আলোর মিছিল’, ছুটির ঘণ্টা সহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গে ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন তিনি।
রাজ্জাক পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র গড়ে তোলেন রাজলক্ষী প্রোডাকশন হাউজ। প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা হয় ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর বেশ কিছু সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন এই কিংবদন্তি।
রাজ্জাক ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার (লক্ষ্মী) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেন রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না।
দেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পুরস্কারে ভূষিত হন। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন মোট পাঁচবার।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান ২০১৩ সালে। এছাড়াও বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ৭৫ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ অবিসংবাদিত রাজা।