নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসীর মালামাল সহ রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ীর গাড়ী ছিনতাই করা গাড়ী ছিনতাই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার সহ ছিনতাই যাওয়া গাড়ী ও মালামাল উদ্ধার করেছে পিবিআই, ঢাকা জেলা। গ্রেফতারকৃতরা যথাক্রমে, মোঃ সোহাগ (২৮), পিতাঃ ইসমাইল শেখ, সাং গর্জিনা, থানাঃ মোকসুদপুর, জেলাঃ গোপালগঞ্জ ও মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩৭), পিতাঃ মোঃ সামছুল হক, মাতাঃ মোসাঃ ফুলমালা বেগম, সাং হাতকোড়া, থানাঃ ধামরাই, জেলাঃ ঢাকা। উক্ত আসামীদের সাভার মডেল থানার মামলা নং ৫৫, তারিখঃ ২০/১১/২০২১ খ্রিঃ, ধারাঃ ৩৯৪ পেনাল কোড এর অভিযুক্ত আসামী হিসেবে জেল হাজতে থাকাবস্থায় আদালতে আবেদনের প্রেক্ষিতে ‘শোন আরেস্ট’ এর মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়।
টাঙ্গাইলে সখিপুরের রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক (৩৫) এর ক্রয়কৃত একটি সিলভার রংয়ের প্রাইভেটকার নং-ঢাকা মেট্রো-গ-৪২-১৯৫৮, মূল্য অনুমান ১৬,০০,০০০ টাকা রেন্ট এ-কারের মাধ্যমে ভাড়ায় চালায়।
গত ২৪/১২/২০২১ খ্রিঃ তারিখে ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক তার এলাকার মোঃ শরীফ তাহার ছোট বোনের স্বামী সৌদি প্রবাসী মোঃ আমিনুল ইসালাম কে ঢাকা এয়ারপোর্ট হইতে বাড়ীতে আনার জন্য নিজ এলাকার যাত্রী উক্ত শরীফ সহ মোঃ আমিনুল ইসলাম (২৮) এবং মোঃ আরিফুল ইসলাম (২২) নামের ৩ যাত্রী নিয়ে ঢাকাস্থ শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে।
উক্ত মোঃ শরীফ তাহার ছোট বোনের স্বামী সৌদি প্রবাসী মোঃ আমিনুল ইসালাম সহ সৌদি আরব থেকে আনা তার মালামাল গাড়ীতে উঠিয়ে টাঙ্গাইল এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে গত ২৫/১২/২০২১ তারিখ রাত অনুমান সাড়ে ৩ টার সময় আশুলিয়া থানাধীন জিরাবো পুলিশ বক্স সংলগ্ন ২০ গজ পূর্বদিকে বাইপাইল টু আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে পৌছাইলে অজ্ঞাত নাম্বারের একটি সিলভার কালারের হায়েচ মাইক্রোবাস তার গাড়ীর পিছন দিক থেকে এসে সিগন্যাল লাইট দিয়ে গাড়ী থামানোর জন্য সিগন্যাল দেয়।
তিনি গাড়ী থামাতে না চাইলে অজ্ঞাত নাম্বারের একটি সিলভার কালারের হায়েচ মাইক্রোবাসে থাকা লোকজন লাঠি বার করে।
তখন বাদী তার গাড়ী থামালে হায়েচ মাইক্রোবাসটি বাদীর গাড়ীর সামনে থামায় এবং মাইক্রোবাস থেকে ৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামীরা নামিয়া নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।
তখন অজ্ঞাতনামা আসামীরা রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক সহ তার সঙ্গীয়দের তল্লাশী করবে বলে গাড়ী থেকে নামতে বলে।
তখন তারা গাড়ী থেকে নামতে না চাইলে চড়-থাপ্পড় মারিয়া সকলকে গাড়ী হতে নামাইয়া তাদের হাত, পা, চোখ, মুখ বাঁধিয়া রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক এর নিকট থাকা ২০,০০০ টাকা, একটি স্যামসাং টাচ মোবাইল সহ প্রবাসী মোঃ আমিনুল ইসলাম এর নিকট হইতে নগদ ১২,০০০ টাকা ও ৩০০০ সৌদি রিয়াল, এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, ৪ টি টর্চ লাইট, বিভিন্ন কসমেটিকস, বিভিন্ন কাপড় চোপড়, পাঞ্জাবীর কাপড় বিভিন্ন মালামাল লুন্ঠন করে এবং গাড়ীতে থাকা অপর দুই জন-আরিফুল ইসলাম এবং মোঃ শরীফ দ্বয়ের নিকট নগদ টাকা সহ তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন লুন্ঠন করে রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক এর গাড়ীটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় এবং তাদের অজ্ঞাত স্থানে ফেলে রেখে চলে যায়।
উক্ত ঘটনায় রেন্ট-এ ’কার’ ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা নং ৪৭(১২)২০২১, ধারা-১৭০/৩৯৪ পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করলে প্রথমে থানা পুলিশ দীর্ঘ দিন মামলাটি তদন্ত করলেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করলে পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পুলিশ সুপার পিবিআই, ঢাকা জেলা মহোদয়ের হাওলা মতে উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শহিদুল ইসলাম, পিবিআই ঢাকা জেলা যথারীতি মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
পুলিশ সুপার পিবিআই ঢাকা জেলা মীর মোঃ শাফিন মাহমুদ এর সার্বিক দিক-নির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম তদন্তের একপর্যায়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারেন যে, সাভার মডেল থানার মামলা নং ৫৫, তারিখ, ২০ নভেম্বর ২০২১ , ধারাঃ ৩৯৪ পেনাল কোড এর অভিযুক্ত জেল হাজতি আসামী মোঃ সোহাগ @ ভাগিনা সোহাগ (২৮) এবং মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩৭) ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে বিজ্ঞ আদালতে আবেদনের প্রেক্ষিতে ‘শোন আরেস্ট’ এর মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার পিবিআই ঢাকা জানান, “গ্রেফতারকৃতদেরকে আমরা ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আদালতে আবেদনের প্রেক্ষিতে ‘শোন আরেস্ট’ এর মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয় ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে এবং আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে চুরি যাওয়া সিলভার রংয়ের প্রাইভেটকার গাড়ী ও মালামাল উদ্ধার করা হয়।
এরপর গ্রেফাতারকৃতদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হলে আসামী মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩৭) আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি করে।
