২৪ ঘন্টার মধ্যে নড়াইলের দীপ্ত হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেলো পিবিআই যশোর, ৪ জন গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক : পিবিআই যশোর জেলা এবং নড়াইল জেলা পুলিশের অভিযানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নড়াইলে দীপ্ত হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত চার আসামীকে গ্রেফাতার করেছে পিবিআই যশোর।

হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারী, বিভিন্ন সময়ে আসামীদের নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়।
ভিকটিম দীপ্ত হাসা নড়াইল সদর থানার হোগলাডাঙ্গা গ্রামের দীনবন্ধু সাহার ছেলে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারী, বিকাল অনুমান ৫ টার সময় নিজ বাড়ি হতে পাশ^বর্তী হোগলাডাঙ্গা পূর্বপাড়া আড়ংখোলায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখার কথা বলে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়।

পরদিন গত ২৫ ফেব্রুয়ারী, সকাল সাড়ে ১১ টায় নড়াইল সদর থানার হোগলাডাঙ্গা গরানের মাঠ হাজরাতলা মহাশ্মশ্বানের উত্তর পাশে জনৈক উত্তম বিশ্বাস এর লীজকৃত মাছের ঘেরে পানির মধ্য থেকে দীপ্ত সাহার এর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের লক্ষ্যে পিবিআই যশোর জেলা জিডি মূলে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ সহ ছায়া তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।

পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্ত্বে পিবিআই, যশোর ক্রাইমসিন টিম ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ শামীম মুসা, সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) রেজোয়ান ও এসআই (নিঃ) গোলাম আলীসহ যশোর জেলার চৌকস দল ছায়া তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী, বিভিন্ন সময়ে দীপ্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী সুমন সরকার (৩০), পিতা-শিশির সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস (২২), পিতা-সরোজিত বিশ্বাস এবং আকাশ রায়(২১), পিতা-গৌতম রায় সকলের ঠিকানা গ্রাম-গোপালপুর, থানা-নড়াইল সদর, জেলা-নড়াইলগণকে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

এছাড়াও গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারী, নড়াইল জেলা পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে আসামী আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন @ বদির (৩২), পিতা-মৃত মিরাজ সিকদার, সাং-যোগানিয়া, থানা-নড়াগাতী, জেলা-নড়াইলকে ভিকটিমের মোটরসাইকেল সহ গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা দীনবন্ধু সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী জানান, আসামী সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস, আকাশ রায় ও ভিকটিম দীপ্ত সকলেই মাদকাসক্ত। তারা একসাথে বসেই মাদক সেবণ করত।

তাদের টাকার প্রয়োজন হলে তারা ভিকটিম দীপ্তকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসমীরা ভিকটিম দীপ্তকে মোবাইল করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে।

ভিকটিম দীপ্ত ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা দীপ্তকে গাঁজা সেবনের উদ্দেশ্যে গাঁজা বানাতে দেয়। দীপ্ত গাঁজার মসলা বানাতে ব্যস্ত থাকাকালে আসামী আকাশ ও সজীব দীপ্তর গলায় পেছন থেকে নাইলোনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দড়ির এক প্রান্তে আকাশ ও অপর প্রান্তে সজীব টেনে ধরে দীপ্তর মৃত্যু নিশ্চিত করে। ভিকটিম দীপ্তর পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি বের করে নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পুকুরে দীপ্তর মৃতদেহ ফেলে দেয়।
এরপর আসামী আকাশ ও সজীব আসামী সুমনকে মোবাইল ফোন করে জানায় যে, তারা দীপ্তকে মেরে ফেলেছে, দীপ্তর মোটরসাইকেলে তেল কিনার জন্য টাকার প্রয়োজন। আসামী সুমন টাকার ব্যবস্থা করছি বলে ফোন কেটে দেয়।

আসামী সজীব ও আকাশ ভিকটিম দীপ্ত এর মোটরসাইকেল নিয়ে বারইপাড়া খেয়াঘাট পার হয়ে কালিয়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে ৫০ টাকার তেল ভরে অপর পলাতক আসামি সজীব পিতা-হাবিব শেখ, সাং-যোগানিয়া, থানা-নড়াগাতী, জেলা-নড়াইল এর কাছে মোটরসাইকেল বিক্রি করার জন্য রেখে আসে।
আসামী সজিব ও আকাশদ্বয় ভিকটিমের মোটরসাইকেলটি আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন @ বদির কাছে আছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।

আসামীদের আদালতে সোর্পদ করা হলে অভিযুক্তরা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *