শব্দ দূষণে প্রায় ১০ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে বধির

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

বিশেষ প্রতিবেদক : শব্দ দূষণ বাড়াচ্ছে নানা রোগের ঝুঁকি। গবেষণা বলছে, দেশের বর্তমান শব্দমান মানুষের স্বাভাবিক শব্দগ্রহণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি। কিন্তু এ দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো উদ্যোগ। গবেষকরা আইন প্রয়োগে তৎপর হতে বললেও পরিবেশ অধিদফতর বলছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।
ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক প্রতিনিয়ত এমন বিকট শব্দ দূষণের শিকার হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। আইন বলছে, হাসপাতাল থাকায় শাহবাগ একটি নীরব এলাকা, কিন্তু এখানেও থেমে নেই শব্দের জন্ত্রণা।
শুধু শাহবাগ নয়, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী সব হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালতের আশপাশের অন্তত ১০০ মিটারের মধ্যে শব্দ দূষণ দ-ণীয় অপরাধ। কিন্তু কে শোনে কার কথা?
পথচারীরা বলেন, বেশি হর্ন বাজায় প্রাইভেটকার। মালিকের সামনেই তারা দেদারছে হর্ন বাজিয়ে চলেছে। ফলে আমরা এখন কানে কম শুনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মানুষের শব্দ গ্রহণের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০-৫০ ডেসিবল। পরিবেশ অধিদফতরের শেষ ২০১৭ সালের গবেষণা বলছে, রাজধানীর ফার্মগেটে এর মাত্রা ১৩৫ দশমিক ৬ ডেসিবল। রাজধানীতে সর্বনি¤œ শব্দ মান পাওয়া গেছে উত্তরায়, সেটিও ১০০ দশমিক ৮ ডেসিবল। শব্দ দূষণে ঢাকাকেও ছাড়িয়েছে চট্টগ্রাম।
ম্যাপে চট্টগ্রাম সর্বোচ্চ ১৩৯.৬ সর্বনি¤œ ১০৩.৯। সিলেট ১৩৪.২ সর্বনি¤œ ৮৭। খুলনায় সর্বোচ্চ ১৩৩.২ সর্বনি¤œ ১০৮.৩। বরিশাল সর্বোচ্চ ১৩৬.৮ সর্বনি¤œ ১১৮.৪। রংপুর সর্বোচ্চ ১৩২.৬ সর্বনি¤œ ৯০.৫। রাজশাহী সর্বোচ্চ ১৩৬.২ সর্বনি¤œ ৯৩.৪। ময়মনসিংহ ১৩৪.৪ সর্বনি¤œ ৮৫.৬ ডেসিবল।
চট্টগ্রামের স্থানীয়রা বলেন, অনেক সময় মাইকের শব্দ হয়, ওই কারণে আমাদের মাথা ঝিম ঝিম করে। রাস্তাঘাট থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে মেজাজটা খিটখিটে হয়ে যায়।
শব্দ দূষণ বৃদ্ধির জন্য নগর পরিকল্পনার ত্রুটি ও আইনের প্রয়োগ না থাকাকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ এর নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল হাসান জোয়ারদার বলেন, শব্দ দূষণের কাণে মানুষ ধীরে ধীরে শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। বুক ধড়ফড় করে। প্রেসার বেড়ে যায়।
তবে পরিবেশ অধিফতর বলছে, শব্দ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতাই মুখ্য বিষয়।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহমেদ বলেন, গাড়ি আগাচ্ছে না তারপরও হর্ন দিতে থাকে, এটা তো বিনা কারণে হর্ন দেয়া। এর জন্য প্রয়োজন ব্যপক জনসচেতনতা।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব অটোলজির গবেষণা বলছে, বর্তমানে দেশের মোট জনশক্তির প্রায় ১০ শতাংশ কোনো না কোনোভাবে বধির।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *