নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় টিকাটুলীর রাজধানীর মার্কেটে ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাজধানীর মার্কেটের সামনে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন। তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
দেবাশীষ বর্ধন আরও জানান, সর্বশেষ ২৫টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে এখনও মার্কেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। এর আগে আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রাজধানী মার্কেটে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আগুনকে কেন্দ্র করে এলাকায় অনেক উৎসুক জনতা ভিড় করে। তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। জনতার ভিড়ে কাজ করতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। আগুন যাতে আশপাশে ছড়াতে না পারে সেজন্য কাজ করে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে আগুন ছড়িয়ে যাতে কোনো সমস্যা তৈরি না হয় সে জন্য টিকাটুলি এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। মার্কেটের আশপাশে সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতাল। আশপাশে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট আছে, যেখানে সিলিন্ডার থাকতে পারে। তাই বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মার্কেটটি টিনশেডের হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে তাদের বেগ পেতে হয়। স্থানীয়দের দাবি দোতলার একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তারা ধারণা করছেন কাপড়ের দোকান থেকে আগুন লেগেছে। তবে, এ বিষয়ে এখনো নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী, নিত্যপণ্য, জুয়েলারিসহ বিভিন্ন রকমের সামগ্রীর দোকান থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। তারা নিচতলা থেকে উপরে উঠতে বাধার সম্মুখীন হন।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার পলাশ চন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে আরও চাওয়া হলে যথাক্রমে আরও ৬ ও ২টি গাড়ি পাঠানো হয়। পরে আরও ৩টি ইউনিট এসে যুক্ত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ ২৫টি ইউনিট কাজ করে।
নিচতলার কোয়েচেঞ্জ ফ্যাশান হাউজের কর্মচারী রমিজ শেখ বলেন, আমরা সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন লাগার ঘটনা জানতে পারি। হঠাৎ আগুন লাগার কথা শুনে সবাই মার্কেটের বাইরে চলে যাই। পরে পানি নিয়ে সবাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে আসে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। দোতলার একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এখানে কাপড়ের দোকান থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করছেন তারা।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত রাজধানী সুপার মার্কেট ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কেটটি মূলত টিনশেড। এখানে পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী, নিত্যপণ্য, জুয়েলারিসহ বিভিন্ন রকমের সামগ্রীর দোকান রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আরমান বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, আমরা উপরে ছিলাম। আগুন দেখে দ্রুত নেমে আছি। এসময় ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেওয়া হয়, তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আগুন বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে না। বাইরে থেকে শুধু ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।
দোতলার দোকানি আয়নাল হোসেন জানান, পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে অনেক পার্টি আসতে পারেনি। মার্কেটে লোক স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিলো। আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে আমরা আগত ক্রেতাদের বের করার চেষ্টা করি। পরে নিজেরা বের হই।