১৬০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে ট্রেন!

অর্থনীতি এইমাত্র বানিজ্য

বিশেষ প্রতিবেদক : প্রতিবেশী দেশ ভারত কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ চীনের ট্রেনের গতি যেখানে ১০০-৩৮০ কিলোমিটার, সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। আর এই সামান্য গতিবেগে ট্রেন ছুটতে গিয়েও হরহামেশা ঘটছে দুর্ঘটনা।
সর্বশেষ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয় রেলের। এর আগে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আরো কয়েকটি স্থানে ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটে বেশ। এ অবস্থায় রেললাইন ঢেলে সাজানোসহ গতি বাড়াতে ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি শম্ভুকগতিতে নয়, দেশে ট্রেন চলাচলের গতি অন্তত ১৬০ কিলোমিটারে উন্নীত করতেও উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, দেশের ট্রেনের গতি ১৬০ কিলোমিটারে উন্নীত করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা যায় সে ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরনের বার্তা আমাদের কাছে এসেছে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সারা বিশ্বেই ট্রেন এখন অন্যতম যানবাহন। আমাদের দেশের মানুষের কাছেও ট্রেন জনপ্রিয়। কিন্তু মাঝে মাঝে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় ট্রেনসেবা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি মানুষের জানমালেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় রেলের প্রতি আস্থা ফেরাতে এবং রেলসেবার মান আরও বাড়াতে গতি বাড়ানো জরুরি। ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করাতে পারলে সেটি হবে দেশের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, পুরো রেললাইনকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি চলছে। রেললাইনে নতুন করে অত্যাধুনিক স্লিপার বসানো, রেললাইন সংস্কার, ডাবল লাইনে উন্নীতকরণসহ নানা কাজও হাতে নিতে যাচ্ছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ সালে এই অঞ্চলের রেলপথের গতি বাড়াতে কয়েক’শ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সবকয়টি রুটেই আগের চেয়ে ১০-৩০ কিলোমিটার গতি বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচুরিয়া-ফরিদপুর লাইনে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০০ কিলোমিটার। লালমনিরহাট-বুড়িমারী লাইনে ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৮০ কিলোমিটার। পার্বতীপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম লাইনে ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১০৫ কিলোমিটার, চাটমোহর ভাঙ্গুড়া সেকশনে ৫০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-জয়দেবপুর সেকশনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১০০ কিলোমিটার, ও দৌলতপুর-যশোর সেকশনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার থেকে ১০০ কিলোমিটারে বাড়ানো হয়।
কিন্তু এক বছরও টেকেনি সেই গতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের করুণ দশা তৈরি হলে আগের গতিতে ফিরিয়ে আনা হয় ট্রেন। এমনকি কোথাও কোথাও আগের চেয়েও গতি কমিয়ে দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *