!! মোবাইলে ডেকে নিয়ে খুন করা হয় নড়াইলের পাচু মোল্লাকে, পরিহিত লুঙ্গীর মধ্যে ইট বেঁধে লাশ ফেলা হয় নদীতে, পিবিআই যশোর কর্তৃক মামলার রহস্য উদঘাটন !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : পূর্ব বিরোধের জেরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে নড়াইলের নড়াগাতী থানার পাচু মোল্লা হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতার সহ মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই যশোর জেলা। গত ২৩-০৫-২০২৩ খ্রিঃ দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটের সময় অভিযুক্ত মোঃ নিশান শেখ (৩০) কে ঢাকা গুলশান-২ হতে গ্রেফতার করা হয়।
ভিকটিম পাচু মোল্লা নড়াইলের নড়াগাতী থানার পানিপাড়া গ্রামের আঃ রাজ্জাক মোল্লার ছেলে। গত ০১/০৫/২০১৫ শুক্রবার সন্ধ্যার সময় ভিকটিম পাচু মোল্লা পুটিমারী বাজারে যায়। পুটিমারী বাজার হতে ঐদিনই রাত অনুমান ৯ টার সময় নিজ বাড়িতে ফেরার পথিমধ্যে মোঃ মামুন মোল্লা @ পাচু মোল্লা’র মোবাইলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করে তাকে বরফাঘাটে ডেকে নিয়ে যায়।
ঐরাতে মোঃ মামুন মোল্লা @ পাচু আর বাড়িতে ফিরে আসে নাই। পরবর্তীতে গত ০৪/০৫/২০১৫ তারিখ সকাল অনুমান ৭ টার সময় দেবদুন গ্রামের পূর্বপাশে মধুমতি নদীর দক্ষিণ তীর হতে মোঃ মামুন মোল্লা @ পাচু এর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নিহত মোঃ মামুন মোল্লা @ পাচু এর ভাই মোঃ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ২৫ জনকে বিবাদী করে নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার মামলা নং-০৩, তারিখ-০৫/০৫/২০১৫, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন। নড়াইল জেলা পুলিশ মামলাটির তদন্তকার্য শুরু করেন।
একপর্যায়ে মামলাটি তদন্তভার সিআইডি নড়াইলের উপর অর্পিত হলে সিআইডি মামলাটি তদন্তশেষে নড়াগাতী থানার অভিযোগ পত্র নং-০৪, তারিখ-২১/০১/২০২০, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড আদালতে দাখিল করলে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই যশোর জেলাকে নিদের্শ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা গ্রহণ করে। পিবিআই যশোর জেলার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) দেবাশীষ মন্ডল মামলাটি তদন্ত করেন।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত¡বধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) দেবাশীষ মন্ডল সহ যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত মঙ্গলবার ২৩ মে দুপুর আড়াইটার সময় অভিযুক্ত মোঃ নিশান শেখ (৩০), পিং-কোবাত শেখ, সাং-জয়নগর, থানা-নড়াগাতী, জেলা- নড়াইলকে ঢাকা গুলশান-২ থেকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ নিশান শেখ জানায় যে, অভিযুক্ত মোঃ নিশান শেখ (৩০) আসামী শওকত মোল্যার চাচাতো খালাতো ভাই পূর্ব বিরোধের জের ধরে সজিব, শওকত, জাহিদ, কাজল ও সালাই সহ অন্যান্য আসামীরা গত ০১/০৫/২০১৫ তারিখ রাত অনুমান ৯ টার সময় ভিকটিম মোঃ মামুন মোল্লা @ পাচু মোল্লাকে পুটিমারি বাজার হতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপাইয়া নিঃশংসভাবে হত্যা করে। ভিকটিমকে হত্যার পর মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে মৃতদেহের পেট ফেড়ে, হাত-পা বেধে তার পরনের লুঙ্গীর মধ্যে ইট বেধে আসামি মোঃ সজীব শেখ (৩২) এর নৌকায় করে মধুমতি নদীতে ফেলে দেয় বলে স্বীকার করে।
অভিযুক্ত মোঃ নিশান শেখ (৩০) কে গত বুধবার ২৪ মে জুয়েল রানা, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত নড়াগাতী আদালতে সোপর্দ করা হলে অভিযুক্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য আসামী সজিব শেখকে পিবিআই গত ১৪-০৬-২০২২ তারিখে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছিল এবং অভিযুক্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।