মোস্তাফিজুর রহমান (জামালপুর) : একটি সেতু করে দেবেন বলে ৫১ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। নির্বাচন এলেই ছুটে আসেন এ এলাকায়। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে শোনান আশার বাণী। কিন্তু নির্বাচন শেষে তাদের আর দেখা মেলে না। তাই আক্ষেপের শেষ নেই সহজ সরল সাধারণ মানুষদের।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের গামারতলা খেয়াঘাটে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে এ আক্ষেপের কথা জানান, চরপোগলদিঘা গ্রামের বাসিন্দারা। এসময় তাদের সঙ্গে যোগদেন স্থানীয় যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন।তারা জানান, একপাশে সরিষাবাড়ী অন্যপাশে কাজিপুর উপজেলা।
এর মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ২০০ বছরের পুরনো সুবর্ণখালি নদী। নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যায়। তখন যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তাদের।
তাই ওই এলাকার অধিকাংশ লোকজন যোগাযোগের জন্য এ রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেতুর অভাবে ওই এলাকার লোকজনসহ সরিষাবাড়ীর লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন।আন্দোলনকারীরা আরও জানান, সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন জনপ্রতিনিধিরা।
ছুটছেন ভোটারদের দোরগোড়ায়, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। আর এই নির্বাচনের আগেই তারা এই সেতুর বাস্তবায়ন চান। তারা প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করেন না। যারাই নির্বাচিত হবেন তাদের কাছেই তাদের একটাই দাবি সুবর্ণখালি নদীর ওপর সেতু চাই।
যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, নদীর পশ্চিম পাশে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ নানা ধরনের স্থাপনা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করেন।
অথচ একটি সেতুর অভাবে তারা সময়মতো স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারে না। শুকনো মৌসুমে আসতে পারলেও বর্ষায় পড়তে হয় দুর্ভোগে।
এছাড়াও কৃষকরা এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারেন না সঠিক সময়ে, ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় তারা।
তাই অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সেতুর দাবি করেন তিনি।পোগলদিঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, সেতুটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত। সেতুটি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে কিভাবে করা যায়, সে বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সকলের সঙ্গে কথা বলা হবে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, সেতুটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত। ইতোমধ্যে আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলেছি।